এলিজাবেথ রেবেকা বেটি উইলসন (ইংরেজি: Betty Wilson; জন্ম: ২১ নভেম্বর, ১৯২১ - মৃত্যু: ২২ জানুয়ারি, ২০১০) ভিক্টোরিয়ার মেলবোর্নে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত মহিলাক্রিকেটার ছিলেন।[১] ১৯৪৭-৪৮ থেকে ১৯৫৭-৫৮ মেয়াদকালে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। তাকে সর্বকালের সেরা মহিলা ক্রিকেটারদের একজনরূপে গণ্য করা হয়ে থাকে।[২][৩] ‘বেটি’ ডাকনামে পরিচিত বেটি উইলসন ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী ছিলেন| তাকে ‘মহিলাদের ব্র্যাডম্যান’ হিসেবে ডাকা হয়ে থাকে।[৪] এছাড়াও তিনি অফ-স্পিন বোলিংসহ ফিল্ডার হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
শৈশবে ল্যাম্প পোস্টের সহায়তা নিয়ে ক্রিকেট খেলা শিখতে শুরু করেন। ১০ বছর বয়সে কলিংউড ওম্যান’স ক্রিকেট ক্লাবে বড়দের সাথে খেলার জন্য মনোনীত হন। ১৪ বছর বয়সে ভিক্টোরিয়া দ্বিতীয় একাদশ ও ১৬ বছর বয়সে বড়দের দলে অন্তর্ভুক্ত হন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে টেস্ট খেলায় অংশ নিতে দেরি হয় তার। ২০ মার্চ, ১৯৪৮ তারিখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। খেলায় তিনি ৯০ রানসহ ৪/৩৭ ও ৬/২৮ লাভ করেন।[৫] নিজস্ব দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১১১ রান তোলেন। এরফলে প্রথম অস্ট্রেলীয় মহিলা হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন। পাশাপাশি ৯ উইকেটও দখল করেন তিনি।
১৯৫১ সালে ইংল্যান্ড সফর করেন। স্কারবোরায় অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ৮১ রান করেন। ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ৭৭ মিনিটে অপরাজিত ১০০* রান করে শেষ বলে অস্ট্রেলিয়াকে জয়লাভ করান। এ সিরিজের পর তিনি আড়াই বছর ইংল্যান্ডে অবস্থান করেন।
১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পুরুষ কিংবা মহিলা - উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরিসহ টেস্টে ১০ উইকেট পান। ভেজা উইকেটে প্রথম ইনিংসে ৭/৭ পান। তন্মধ্যে মহিলাদের টেস্টে প্রথমবারের মতো হ্যাট্রিক করার গৌরব লাভ করেন তিনি।[৬] ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৮ সালে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যকার টেস্টে তিনি এ কীর্তিগাথা রচনা করেন। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে পাকিস্তানেরশাইজা খান ও ২০১১ সালে স্বদেশী রেনে ফারেল এ কৃতিত্বের অধিকারী হন।[৭] অস্ট্রেলিয়ার নিম্ন রান সংগ্রহের মধ্যেও তিনি ১২ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০০ তোলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৯ ওভারে ৪/৯ লাভ করেন ও খেলায় ১১/১৬ নিয়ে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েন যা ২০০৪ সাল পর্যন্ত টিকেছিল।
সম্মাননা
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১১ টেস্ট খেলে ৫৭.৪৬ গড়ে ৮৬২ রান করেন। এছাড়াও ১১.৮০ গড়ে ৬৮ উইকেট নেন। ১৯৮৫ সালে প্রথম মহিলা ক্রিকেটার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান স্পোর্টিং হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন।[৮] ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে অনূর্ধ্ব-২১ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ তার সম্মানার্থে ‘বেটি উইলসন শীল্ড’ নামে আখ্যায়িত হয়। ২০১৫ সালে বেটি উইলসনকে আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৫]
তথ্যসূত্র
↑"Betty Wilson"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১০।