বাহরাইন ছিল প্রাচীন দিলমুন সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র। পারস্য উপসাগরে বাহরাইনের কৌশলগত অবস্থানের পেছনে ছিল মূলত ফার্সি, সুমেরীয়, আসিরীয়, ব্যাবিলনীয়, পর্তুগিজ, আরব এবং ব্রিটিশদের শাসন ও জীবনাচারের প্রভাব। যদিও এই দেশটির সাথে আরবদের চেয়েও দীর্ঘকালব্যাপী অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক ছিল ভারতীয় অথবা দক্ষিণ এশীয়দের সাথে।
বাহরাইন ছিল প্রাচীন দিলমুন সভ্যতার কেন্দ্রস্থল।[১] খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দের শেষের দিকে উরুক শহরে অবস্থিত দেবী ইনান্নার মন্দিরে সুমেরীয় কিউনিফর্মের কাঁদামাটির ট্যাবলেটগুলি থেকে সর্বপ্রথম দিলমুন সম্পর্কে জানা যায়। দিলমুন বিশেষণটি দিয়ে একটি বিশেষ ধরনের কুড়াল এবং একজন নির্দিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বুঝানো হয়। সেই সাথে দিলমুনের সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত পশমের পরিমাণ কত হবে তার তালিকাও বিদ্যমান।[২]
ব্যাবিলনে ক্যাসাইট রাজবংশের সময়ে নিপুর থেকে উদ্ধার করা দ্বিতীয় বার্না-বুরিয়াসের সময়কার (খ্রিস্টপূর্ব ১৩৭০) দু'টি চিঠিতে দিলমুনের উল্লেখ পাওয়া যায়। চিঠিগুলি দিলমুনের প্রাদেশিক কর্মকর্তা ইলি-ইপ্পা-আস্রা প্রেরণ করেছিলেন তার মেসোপোটেমিয়ার বন্ধু এনলিল-কিডিনি কে। উল্লেখিত নামগুলি আক্কাদিয়ান ভাষার। এই চিঠিগুলি এবং অন্যান্য নথিপত্র, সেই সময় দিলমুন এবং ব্যাবিলনের মধ্যে প্রশাসনিক সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। ক্যাসাইট রাজবংশের পতনের পর, খ্রিস্টপূর্ব ১২৫০ সালে আসিরীয় শিলালিপিসমূহে অসুররাজকে দিলমুন এবং মেলুহের রাজা হিসাবে ঘোষণা করা ব্যতীত কোন মেসোপটেমিয়ান দলিলে দিলমুনের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। আসিরীয় শিলালিপিগুলোতে দিলমুন থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের হিসাব পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দের সময়কার অন্যান্য আসিরীয় শিলালিপিগুলো থেকে ধারণা করা যায় যে সেসময় দিলমুনে আসিরীয় রাজত্ব কায়েম ছিল।[৩] পরবর্তীতে মেসোপটেমিয়ার ক্যাসাইট রাজবংশও দিলমুন শাসন করেছিল। [৪]
তথ্যসূত্র