বাদল গুপ্তের আসল নাম সুধীর গুপ্ত। তার জন্ম ঢাকারবিক্রমপুর এলাকার পূর্ব শিমুলিয়া গ্রামে, যা বর্তমানে বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলার অন্তর্গত।[২] বানারিপাড়া স্কুলে পড়ার সময়ে সেখানকার শিক্ষক নিকুঞ্জ সেন বাদলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেন। বাদল বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সে স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে যোগ দেন।
রাইটার্স ভবনে হামলা
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স(বি.ভি.)-এর বিপ্লবীরা কারাবিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেল কর্নেল এন এস সিম্পসনের উপরে হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। সিম্পসন কারাগারে রাজবন্দীদের উপরে অত্যাচারের জন্য কুখ্যাত ছিলেন। সিম্পসনকে হত্যা করা ছাড়াও বিপ্লবীদের লক্ষ্য ছিলো কলকাতার ব্রিটিশ শাসকদের সচিবালয় রাইটার্স ভবনে হামলা চালিয়ে ব্রিটিশ শাসকদের মনে ত্রাস সৃষ্টি করা। ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বরদীনেশ গুপ্ত ও বিনয় বসুর সাথে মিলে বাদল গুপ্ত ইউরোপীয় বেশভুষার ছদ্মবেশ নিয়ে রাইটার্স ভবনে প্রবেশ করেন, এবং কর্নেল সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন। ব্রিটিশ পুলিশ পালটা গুলি চালাতে শুরু করে। বন্দুকযুদ্ধে ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার টোয়াইনাম, প্রেন্টিস ও নেলসন আহত হন। নিকটের লালবাজার থেকে কমিশনার টেগার্টের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী তাদের ঘিরে ফেলে এবং অচিরেই তিন বিপ্লবী পরাস্ত হন। তবে তারা পুলিশের হাতে ধরা দিতে চাননি, তাই বাদল পটাশিয়াম সায়ানাইড খান এবং বিনয় ও দীনেশ আত্মহত্যার জন্য নিজেদের উপরে গুলি চালান। বিষ খেয়ে ঘটনাস্থলেই বাদল গুপ্তের মৃত্যু হয়। ইতিহাসে এই তিন বীরের মহাকরণ আক্রমণ 'অলিন্দ যুদ্ধ' নামে খ্যাত।
ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে বিনয়-বাদল—দীনেশের নামানুসারে কলকাতার ডালহৌসি স্কোয়ারের নাম পালটে রাখা হয় বি-বা-দী বাগ (বিনয়- বাদল-দীনেশ বাগ)। এই অলিন্দ যুদ্ধের স্মৃতিতে রাইটার্স বিল্ডিং এর দ্বিতলে একটি প্রস্তর ফলক আছে।
তথ্যসূত্র
↑রায়, প্রকাশ (২০২১)। বিস্মৃত বিপ্লবী। চেন্নাই: নোশনপ্ৰেস, চেন্নাই, তামিলনাড়ু।