বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় বা বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট প্রেস (সংক্ষেপে বি.জি. প্রেস) বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রাতিষ্ঠানিক ছাপাখানা। এটি বি.জি. প্রেস নামেও পরিচিত। এই প্রেস সরকারের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রণ কাজ, যেমন- বাজেট, প্রতিবেদন, কর্মসূচী, আইন, লিফলেট, পোস্টার, আদেশপত্র, অর্থনৈতিক সমীক্ষা, সাময়িকী, ফরম (স্ট্যান্ডার্ড ও নন-স্ট্যান্ডার্ড), ডিও প্যাড, ডিও খাম, দাওয়াতপত্র এবং ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে পুনর্গঠন সংক্রান্ত অবকাঠামো, মানবশক্তি, প্রযুক্তি ও উৎপাদন বিষয়ে মুদ্রণ ও প্রকাশনার কাজ করে থাকে।[১] উক্ত প্রেস আদালতের রায় এবং আইনি মামলা মুদ্রণের জন্য দায়বদ্ধ।[২]
ইতিহাস
বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট শুরুতে ইস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট প্রেস হিসাবে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর স্বাধীন রাষ্ট্রের ছাপাখানা হিসেবে কলকাতার বেঙ্গল গভর্নমেন্ট প্রেসের কিছু মুদ্রণ যন্ত্র ও জনবলসহ নাজিমউদ্দীন সড়কস্থ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে পূর্ব বঙ্গ সরকারি মুদ্রণালয় স্থাপন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে বর্তমান অবস্থানে অর্থাৎ ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় উক্ত প্রেসকে পুনরায় স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়েছিল এবং এর নামকরণ করা হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান সরকারি মুদ্রণালয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে পূর্ব পাকিস্তান সরকারি মুদ্রণালয়, বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয়ে পরিণত হয়।[১]
২০১২ সালে বি.জি. প্রেস দ্বারা মুদ্রিত অনুরূপ জাল চেক ব্যবহার করে এক প্রতারক চক্র ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছিল।[৩] ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানিয়েছিল যে, প্রিন্টিং প্রেসটিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা অ-পর্যাপ্ত ছিল। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষাসহ জাতীয় পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের পরে প্রেসের নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল।[৪] ২০১৬ সালের জুনে প্রেসের একজন কর্মচারী এইচ.এস.সি. পরীক্ষার প্রশ্নপত্র মুখস্থ করে সেগুলি বিক্রির চেষ্টা করেছিলেন। এ ঘটনায় তাকে সহ আরও ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।[৫]
তথ্যসূত্র