এই নিবন্ধটির তথ্যসূত্র উদ্ধৃতিদানশৈলী ঠিক নেই। অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত নিয়মকানুন অবলম্বন করে উৎসনির্দেশ, পাদটীকা, অথবা বহিঃসংযোগ প্রদানের মাধ্যমে তথ্যসূত্রগুলো আরও পরিষ্কার করে উপস্থাপন সম্ভব।(ফেব্রুয়ারি ২০২২)
১৯৪৭ পূর্ব ভারতবর্ষে বিমান চালনার ইতিহাস শুরু হয়েছিল ঘুড়ি উড়ানোর দ্বারা। ঘুড়ি হচ্ছে মানুষ কর্তৃক নির্মিত বাতাস অপেক্ষা ভারী বস্তু যা এক বা একাধিক ব্যক্তি দ্বারা ভূমি থেকে উড়ানো হত।প্রথম মানব দ্বারা চালিত উড়ার ঘটনা আয়োজন করা হয়েছিল ঢাকা নওয়াব পরিবার এ ১৮৮২ সালে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে উড়ার ঘটনাটি অসফল হয়েছিল এবং চালকের মৃত্যু ডেকে এনেছিল।
শুরুর যুগ
চালকহীন বিমানচালনা
মুঘল আমল থেকেই ঘুড়ি উড়ানো ছিল ঢাকার মানুষদের অন্যতম বিনোদনের উৎস। ১৭৪০ সালে নওয়াব-ই-নাজিম নওয়াজেশ মোহাম্মদ খাঁন এর সময়ে এটি একটি আনন্দময় ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছিল। ঘুড়ি উড়ানো এখনও বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি অবসর কাটানোর মাধ্যম।পুরান ঢাকায় এটি অন্যতম জনপ্রিয় কাজ। অষ্টাদশ শতাব্দীর বাংলাদেশে ঘুড়ির নকশা ছিল একটি বিশেষ শিল্প । জানা যায় বাংলার কিছু ঘুড়ি একটানা তিন মাস ধরে উড়ত।এগুলো ছিল মোটা রশিতে বাধা বড় ঘুড়ি ।
ঘুড়ি উড়ানো উৎসব অনেক কাল ধরেই একটা বড় উৎসব হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর বাংলা দিনপঞ্জির শেষ দিনে (৩০ শে চৈত্র, মধ্য এপ্রিল) চৈত্র সংক্রান্তি (পুরান ঢাকায় 'সাকরাইন' অথবা 'হাকরাইন' নামেও পরিচিত) উৎসব পালন করা হয়ে থাকে। এটি ঘুড়ি উড়ানো ও নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার অন্যতম প্রধান উৎসব। পশ্চিম বাংলায় ঘুড়ি উড়ানোর প্রধান উৎসব অনুষ্ঠিত হয় মকর সংক্রান্তি এবং বসন্ত পঞ্চমীতে ।
প্রথম মানব উড্ডয়ন
জিনেট ভ্যন ট্যাসাল নামক একজন মার্কিন তরুনীকে তৎকালীন নবাব খাজা আহসানউল্লাহ ভাড়া করে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি একজন পেশাদার বেলুন উড্ডয়ন কারীনী ছিলেন। ১৬ মার্চ ১৮৯২ সালে তিনি বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ তীর থেকে আহসান মনজিল এর ছাদের দিকে যাত্রা করেন। কিন্তু এক আকস্মিক দমকা বাতাস তাকে শাহবাগ এর বাগানের দিকে নিয়ে যায় এবং তার বেলুন গাছের সাথে আটকে যায়। তিনি মাটিতে পড়ে মৃত্যু বরণ করেন। তাকে ঢাকার নারিন্দার খ্রিস্টান কবরে সমাহিত করা হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তেজগাঁও এ ভারতের ব্রিটিশ সরকার দ্বারা রাজকীয় বিমান বাহিনীর জন্য রানওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশে আধুনিক বিমানের যাত্রা শুরু হয়। বার্মা ও কোহিমা তে যুদ্ধ বিমান পাঠানোর জন্য এটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
১৯৪৩ সালের আগস্টে অ্যাডমিরাল মাউন্টব্যেটেন এর অধীনে একটি দক্ষিণ এশীয় অংশ গঠন করা হয় যার মধ্যে আর এ এফ তৃতীয় কুশলী বিমান বাহিনী দলও অন্তর্ভুক্ত ছিল।এই দলটি ওই বছরেই জাপান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ২য় বার্মা সমর অভিযান শুরু করে। ১৯৪৪ সালে একটি ব্রিটিশ সৈন্যদল আরাকান উপুকূলে অগ্রসর হওয়ার সময় রাজকীয় বিমান বাহিনীর ভারতীয় অংশ রাজকীয় ভারতীয় বিমান বাহিনী কৌশলগত জরিপ ও সাহায্য করার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৯৪৩ সালের নভেম্বরে ৬ স্কোয়াড্রন ও পরবর্তীতে ৮ স্কোয়াড্রন কে কক্সবাজারে সরানো হয়। ১৯৪৪ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝেই ৬ স্কোয়াড্রন এর বিমান চালকরা ১০০০ এর অধিক আক্রমণ সমাপ্ত করে। গড়ে প্রতিদিন একজন বিমানচালক ৬ টি আক্রমণ সমাপ্ত করে যা সমগ্র ৩য় টি এ এফ এর মধ্যে সর্বোচ্চ।১৯৪৪ এর মার্চের শেষদিকে ৪ স্কোয়াড্রন অভিযানে যোগ দেয় যখন এটিকে ফেনী বিমান ঘাঁটিতে সরানো হয় ।পরবর্তীতে জুন মাসে কুমিল্লা তে নিয়ে যাওয়া হয় ৬ স্কোয়াড্রন কে পতিস্থাপন করতে।
স্বল্প সময়ের জন্য ইমফাল ও কোহিমার যুদ্ধে কৌশলগত জরিপের মাধ্যমে সহায়তা করার পর ৯ স্কোয়াড্রন কে মে মাসে কুমিল্লায় সরানো হয় ।১৯৪৪ সালের আগস্টে এই দুটি স্কোয়াড্রন সাঙ্গু নদী উপত্যকায় জাপানিজ অবস্থান সমূহের উপর ব্যাপক গোলা বর্ষণ করে।১৯৪৪ সালের ডিসেম্বরের শেষে ১০ স্কোয়াড্রন কেও রামুতে সরানো হয় । ৩ মে ১৯৪৫ সালে রেঙ্গুন এর পতনের পর বার্মা অভিযান স্তিমিত করা হয় ।জুনের শেষদিকে ৮ স্কোয়াড্রন বাদে রাজকীয় বিমান বাহিনীর অধিকাংশ স্কোয়াড্রন প্রত্যাহার করে নেয়া হয় ।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪১ সালে যখন ব্রিটিশ সরকার তেজগাঁও বিমান বন্দরের জন্য একটি অতিরিক্ত বিমান নামার পথ তৈরি করে তেজগাঁও এর কয়েক কিলোমিটার উত্তরে কুর্মিটোলায় । ওই সময়ে কোহিমা ও বার্মার যুদ্ধ ক্ষেত্রের দিকে যুদ্ধ বিমান পরিচালনা করার জন্য তেজগাঁও ছিল একটি সামরিক বিমানবন্দর। ১৯৪৪-১৯৪৫ সালে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছিল একটি যুদ্ধ বিমান ঘাঁটি ।তখন এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনী বিমানদল কর্তৃক সাহায্যকারী স্থান ও জরিপ চালনার কাজে ব্যবহার হত।চটগ্রামে যেসব আমেরিকান দল কে স্থাপন করা হয়েছিল তার মধ্যে ৮০তম আক্রমণকারী দল,৮তম জরিপ দল,এবং ৪র্থ যুদ্ধ কার্গো দল সম্পর্কে জানা যায়। সিলেট বেসামরিক বিমানবন্দর হিসেবে ব্রিটিশ শাসনকালে সিলেটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরি করা হয় মূলত বার্মা থেকে পরিচালিত জাপানীজ আগ্রাসন থেকে রক্ষা পাবার জন্য।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আয় করে এই বিমানবন্দর থেকে।
বেসামরিক বিমানচালনা
যুদ্ধ শেষে ঢাকায় রাজকীয় বিমান ঘাটির প্রয়োজনে ঔপনিবেশিক সরকার তেজগাঁও বিমানবন্দর এবং কুর্মিটোলায় রানওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় ।১৯৪৬ সালে মির্জা আহমাদ ইস্পাহানি এবং তার সহযোগীরা রিজেন্ট এয়ারওয়েজ নামে একটি বিমান পরিবহন সংস্থা চালু করেন যা বিমান বন্দর টিকে বেসামরিক বিমান বন্দর হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করে। পাকিস্তান জন্মের পর ৭ জুন ১৯৫৪ সালে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ করাচী থেকে ঢাকাডি সি ৩ বিমান চালনা শুরু করে যা পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের রাজধানীর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ স্থাপন করে।১১ মার্চ ১৯৫৫ সালে সরকার প্রস্তাবিত পাকিস্তান আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থার সাথে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ একিভূত হয় যা পরবর্তীতে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক বিমান নামে পরিচিত হয় ।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারতের স্বাধীনতা মেনে নেয় ও পাকিস্তানের সৃষ্টি করে যার মধ্যে আজকের বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান ফ্লাইং ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ।১৯৬০ সালের মধ্যে ব্রিটিশ ওভারসীজ এয়ারওয়েজ কর্পোরেশন এবং প্যান আমেরিকান এয়ারওয়েজ ঢাকা তে যাত্রা পরিচালনা শুরু করে, পি আই এ বোয়িং ৭০৭ এবং ভিকারস ভি সি ১০ জেট বিমান চালু করে এবং আগের রাজকীয় বিমান ঘাঁটির বাহিরে যশোর, চট্টগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, ঈশ্বরদী ও কুমিল্লায় নতুন বিমান বন্দর নির্মিত হয় ১৯৬২ সালের সিনো-ভারতীয় যুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানে পরিসেবা দেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছিল যার ফলে পিআই এ ১৯৬৬ সালে অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই পথে সিকোর্স্কি এস ৬১ হেলিকপ্টার চালু করে ।১৯৭১ সালের যুদ্ধে সৈন্য পরিবহন এর মাধ্যমে পিআই এ পাকিস্তান সেনাবাহিনী কে সাহায্য করে এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর আক্রমণের মুখে কিছু বিমান হারায় ।যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন পরেই ঢাকাতে সরকারী যাত্রিদের জরুরী পরিবহনের জন্য পাকিস্তান আন্তর্জাতিক বিমান ১০ থেকে ১৩ মার্চ তাদের সব আন্তর্জাতিক চলাচল বাতিল করে ।এই সরকারী যাত্রীদের প্রায় সবাই ছিল বেসামরিক পোশাকে পাকিস্তানি যোদ্ধা।
স্বাধীনতা যুদ্ধ
১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতীয় বিমান বাহিনী ও পাকিস্তান বিমান বাহিনী বাংলাদেশের আকাশ সীমায় যুদ্ধে লিপ্ত হয় যার মধ্যে প্রথম লড়াই টা ছিল ২২শে নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বয়রায়। যুদ্ধের সময় তেজগাঁও বিমান বন্দরের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
কয়েকজন সাবেক পাকিস্তান বিমান বাহিনী কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদ, ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ, ক্যাপ্টেন সাত্তার, ক্যাপ্টেন সরফুদ্দিন প্রমুখ এর প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ভারতে সংগঠিত হয় ।পরবর্তীতে অনেক বাংলাদেশী সাবেক পাকিস্তান বিমান বাহিনী কর্মকর্তা ভারতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেয় ।জুলাই মাসের শেষ দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী তৈরী হয় ।জুলাই ১৯৭১ থেকে নভেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত এসব কর্মকর্তাদের ভারতীয় বিমান বাহিনী যুদ্ধ বিমান চালক হিসেবে প্রশিক্ষণ দেয় । বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে প্রথম আক্রমণে যায় এবং তাদের আক্রমণে চট্টগ্রামস্থ তেল সংরক্ষণাগার সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়।এই আক্রমণ পরিচালনা করেন ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ।৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে মৌলভীবাজারে পাকিস্তানি সেনা ছাউনীতে দ্বিতীয় আক্রমণ করা হয় স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদের নেতৃতে যেখানে সহকারী বিমান চালক হিসেবে ছিলেন ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন আহমেদ।
তারপর ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে, ইস্টার্ন এয়ার কম্যান্ড এর ক্যানবেরা বোমারু বিমান তেজগাঁও এ আঘাত হানে যা পি এ এফ ১৪ নং স্কোয়াড্রন কর্তৃক পাহারায় ছিল । পি এ এফ ১৪ নং স্কোয়াড্রন স্যাবর জেট দ্বারা সজ্জিত ছিল যা রাতে আক্রমণ পরিচালনা করতে অক্ষম ।৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সকালের মধ্যেই তেজগাঁও এ আক্রমণ করার মিশন ১১ আই এ এফ স্কোয়াড্রন এর উপর ন্যাস্ত করা হয় ।
৪ ও ৫ ডিসেম্বর ধরে আই এ এফ ভূমিতে আক্রমণের প্রতি মনোনিবেশ করে ।কিন্তু এটি পি এ এফ এর ছদ্মবেশের কারণে এর সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করতে ব্যর্থ হয় ।৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যার দিকে আই এ এফ তাদের কৌশল পরিবর্তন করে ।৬ ডিসেম্বর সকালে গৌহাটি থেকে উড়ে আসা ৪ টি মিগ-২১ ১০০০ পাউন্ড বোমাসহ তেজগাঁও এ আঘাত হানে ।৭ ডিসেম্বর সকালে কুর্মিটোলা আক্রমণের স্বীকার হয় যখন ২৮ স্কোয়াড্রন এর মিগ ২১ বিমান এর রানয়েতে আঘাত হানে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পশ্চিম অংশকে সাহায্য করার জন্য ৬ ডিসেম্বর ৭ নং স্কোয়াড্রন কে পূর্ব অংশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় ।পাকিস্তানিরা যাতে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য আই এ এফ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরিত্যক্ত কুমিল্লা, লালমনিরহাট শমসেরনগর সহ অন্যান্য বিমান ঘাটিতেও বোমা বর্ষণ করে।
২০শে আগস্ট ১৯৭১ সকাল ১১.১৫ মিনিটে পাঞ্জাবী পাইলট অফিসার রাশেদ মিনহাজসহ ফ্লাইট লেঃ মতিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের জন্য টি-৩৩ প্রশিক্ষণ বিমান (কল সাইন ব্লু-বার্ড-১৬৬) ছিনতাই করে পাকিস্তানের করাচী থেকে ভারত অভিমূখে উড্ডয়ন করেন। রাশেদ মিনহাজের সাথে কন্ট্রোল নিয়ে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সিন্ধুর বেদিনে বিমানটি বিধ্বস্ত হলে উভয়েই শাহাদত বরণ করেন। মতিউরকে বাংলাদেশ সরকার 'বীরশ্রেষ্ঠ' এবং মিনহাজ কে পাকিস্তান সরকার 'নিশান-ই-হায়দার' যথাক্রমে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সামরিক খেতাবে ভূষিত করে। দুজনের নামেই যথাক্রমে যশোর ও কামারে বিমান ঘাটির নামকরণ করা হয়েছে ।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়
পুনরায় বেসমরিক বিমান চালনা শুরু
ক্যাপ্টেন এ. রহিম দ্বারা চালিত সেসনা -১৫০ এর মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বেসামরিক বিমানযাত্রা শুরু হয় তেজগাঁও বিমান বন্দর থেকে ১ জানুয়ারী ১৯৭২ সালে। ১০ জানুয়ারী ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানযাত্রার গন্তব্য ছিল কলকাতা ।b এই যাত্রার ডগলাস ডি সি ৩ বিমানটি ভূপতিত হয় এবং সকলেই মৃত্যু বরণ করে ।
পি আই এ এর একটি ফেলে যাওয়া বোয়িং ৭০৭ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গঠিত হয় ।
পি আই এর কোন বিমান তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে ফেলে যায় নি। যেকটি এফ ২৭ ফোক্কার বিমান ছিল, তা পাকিস্তান সেনা কর্তৃপক্ষ রেংগুন নিয়ে যায়। বিমান প্রথম ব্রিটিশ ক্যালিডোনিয়ান এয়ারলইনস থেকে একটি বোয়িং ৭০৭ বিমান নিয়ে আন্র্তজাতিক ফ্লাইট চালু করে( ঢাকা-লন্ডন)। এছাড়া দুটি এফ -২৭ বিমান ভারত থেকে লিজ নিয়ে আভ্যন্তরিন ও ঢাকা-কোলকাতা ফ্লাইট চালু করা হয়।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী
এয়ার কমোডোর এ.কে.খন্দকার (পরবর্তীতে এয়ার ভাইস মার্শাল, চীপ অফ এয়ার স্টাফ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী) এর অধীনে ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে ভারতের ডিমাপুরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠিত হয়।সেই সময় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী "কিলো ফ্লাইট" হিসেবে তৈরী হয়েছিল মুক্তি বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য।শুরুতে 'কিলো ফ্লাইট ' ০৯ জন কর্মকর্তা, ৪৭ জন বৈমানিক এবং ভারতীয় বিমান বাহিনী প্রদত্ত তিনটি আকাশযান নিয়ে গঠিত হয়েছিল ।স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদ (এয়ার ভাইস মার্শাল, চীপ অফ এয়ার স্টাফ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী হিসেবে অবসর গ্রহণকারী) 'কিলো ফ্লাইট ' এর কমান্ডার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন ।আকাশ থেকে ভূমিতে অস্ত্র প্রেরণের উপর কিছু মৌলিক প্রশিক্ষণের পর কিলো ফ্লাইট সফল ভাবে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ এর তেল সংরক্ষণাগারে বোমা বর্ষণ করে এবং এভাবেই বি এ এফ এর যাত্রা শুরু হয় ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ দিকে নবগঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পাকিস্তানিদের উপর ১২ টি সফল আক্রমণ পরিচালনা করে।[২২]
১৯৭১ এর স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সোভিয়েত ইউনিয়ন ও গণচীন এর নিকট থেকে যন্ত্রাংশ লাভ করে যার মধ্যে ছিল "মিকোয়ান -গারিভিচ মিগ ২১ " যুদ্ধ বিমান, "এন্টনভ এ এন ২৪", এন্টনভ এ এন ২৬ " পরিবহন বিমান এবং মিল এম আই ৪ হেলিকপ্টার ।
১ জুলাই ১৯৫৭ঃ পি আই এ ডগলাস ডি সি ৩ বিমান চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও বিমানবন্দর যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরে চরলখী দ্বীপের কাছে বিধ্বস্ত হয় । এতে বিমানের ৪ জন ক্রু সহ ২০ আরোহীর সবাই মৃত্যু বরণ করেন।[২৩]
২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ ঃ পি আই এ ফ্লাইট ১৭ ঢাকা থেক ফরিদপুর যাওয়ার পথে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়।এতে বিমানের ৩ জন ক্রু সহ মাত্র একজন বাদে ২১ আরোহীর সবাই মৃত্যু বরণ করেন।[২৪]
২ ডিসেম্বর ১৯৭০ ঃ জার্মানীর হ্যাম্বুরগ থেকে ছেড়ে আসা ত্রানবাহী একটি প্লেন ঢাকার তেজগাঁও এর নিকট বিধ্বস্ত হয় ।[২৫] বিমানটিতে সুইস রেড ক্রস এর ২৭.৫ টন শিশু খাদ্য ছিল । কার্গো বিমানটি পূর্ব পাকিস্তানের বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করার উদ্দেশে আসতেছিল । তেজগাঁও বিমান বন্দরে নামার সময় চালক বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং বিধ্বস্ত হয় ।
বাংলাদেশ আমল (প্রাচীন )
১০ অক্টোবর ১৯৭২ ঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ডি সি ৩ বিমান প্রশিক্ষণ উড্ডয়ন পরিচালনার সময় ঢাকার নিকটে বিধ্বস্ত হয় । এতে ৫ আরোহীর সকলেই মৃত্যু বরণ করেন ।[২৬]
২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭৭ ঃ মুম্বাই থেকে টোকিওর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া জাপান এয়ারলাইন ফ্লাইট ৪৭২ উড্ডয়নের অল্প সময় পরেই ৫ জন জাপানী লাল সেনা কর্তৃক অপহৃত হয় এবং বিমানটিকে জোর পূর্বক তৎকালীন তেজগাঁও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করানো হয় । সন্ত্রাসীরা ৬ মিলিয়ন ডলার এবং জাপানী জেল থেকে ৬ জন জে আর এ সন্ত্রাসীর মুক্তি দাবি করে । বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হয় ।[২৭][২৮]
১৮ নভেম্বর ১৯৭৯ ঃ পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ফকার এফ ২৭-২০০ বিধ্বস্ত হয় ।এতে ৪ আরোহীর কেউ নিহত হয় হয়নি।[২৯ ]
৫ আগস্ট ১৯৮৪ ঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ফকার এফ ২৭-৬০০ জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিকট একটি জলাভূমিতে বিধ্বস্ত হয় । বিমানটি চট্টগ্রাম পতেঙ্গা বিমানবন্দর থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পূর্ব নির্ধারিত যাত্রী পরিবহন করছিল । বিমানটি খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিধ্বস্ত হয় ।[৩০]বিমানের চালক ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা বাণিজ্যিক বিমান চালক কানিজ ফাতেমা রোকসানা ।[৩১]এটি বাংলাদশের মাটিতে ঘটা ভয়াবহতম বিমান দুর্ঘটনা । এতে ৪৯ জন নিহত হয় ।[৩২]
২২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ ঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ফ্লাইট বি জি ৬০৯ জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর যাওয়ার পথে ঘন কুয়াশার কারণে ধান খেতে বিধ্বস্ত হয় ।এতে ১৭ জন আহত হয়।[৩৩]
২৭ জুন ১৯৯৮ ঃ ঈশ্বরদী বিমান বন্দর থেকে ছেড়ে আসা এয়ার পারাবাত ফ্লাইট কারিগরী ত্রুটির কারণে সাভারের নিকট একটি মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে কেউ হতাহত হয় নি ।[৩৪]
২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ ঃ সেসনা ১৫০ বিমানে চালানো পারাবাত ফ্লাইং একাডেমীর একটি প্রশিক্ষণ উড্ডয়ন দুজন প্রশিক্ষণার্থী বৈমানিক সহ বিধ্বস্ত হয় ।[৩৪]
২২ এপ্রিল ২০০৩ ঃ ঢাকায় এক ঘূর্ণিঝড়ে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থান করা তিনটি এয়ারবাস এ ৩১০ ,একটি বোয়িং ৭০৭ এবং একটি ফকার এফ-২৮ বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয় । তিন বছরের মধ্যে শক্তিশালী ওই ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১১ কিলোমিটার ।[৩৫]
১১ জুলাই ২০০৩ ঃ একটি এয়ার মেমফিস কার্গো বিমান (বোয়িং ৭০৭ দ্বারা চালিত) জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা থেকে রানী আলিয়া বিমানবন্দর ,আম্মানের উদ্দেশে ছেঁড়ে যাওয়ার পথে অজানা কারণে জরুরী উড়াল বাতিল করতে বাধ্য হয় ।সফলভাবে উড়াল বাতিল করতে ব্যর্থ হওয়ায় রানওয়ে থেকে ৪৫০ মিটার দূরে জলাভূমিতে আটকে যায়।এ ঘটনায় ৫ জন ক্রু এর কেউ হতাহত হয়নি।[৩৬]
৮ অক্টোবর ২০০৪ ঃ বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ফ্লাইট বি জি ৬০১ ৭৯ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু সহ জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর যাওয়ার পথে ফকার এফ২৮-৪০০০ সিলেটের ভেজা রানওয়েতে পিছিলিয়ে যায় এবং খাদে পড়ে যায়। এতে দুইজন আহত হয়।[৩৭]
৮ জুন ২০০৫ ঃ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধ বিমান রাজধানির অদূরে বিধ্বস্ত হয় ।এতে একজন নিহত ও ৪ জন আহত হয় । চায়নায় তৈরী এফ৭ বিমান ভরদুপুরে উত্তরা আবাসিক এলাকায় নেমে আসে ।চালক সামান্য আহত অবস্থায় বেরিয়ে আসতে সমর্থ হয়।যে বাড়ীতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় তা সম্পূর্ণ রুপে ধ্বংস হয় এবং পাশের দুটি বাড়ী আংশিক ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।[৩৪]
১ জুলাই ২০০৫ ঃদুবাই থেকে ছেঁড়ে আসা বিমান ফ্লাইট বি জি ০৪৮ ভারী বৃষ্টির কারণে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ২৩ নং রানওয়েতে অবতরণের সময় পিছলিয়ে যায় । এমসি ডনেল ডগলাস ডি সি ১০-৩০ বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবং ডান পাখা থেকে ইঞ্জিন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।বিমানে থাকা ২০১ জন যাত্রী ও ১০ জন ক্রূর মধ্যে ১০ জন আহত হলেও কারো মৃত্যু ঘটেনি ।[৩৫][৩৬]
২৫ মে ২০০৮ ঃ মদিনা থেকে আসা সৌদি ফ্লাইট ৮১০ , বোয়িং ৭৪৭-৩০০ জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর এর ৩ নং ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায় ।বিমানে থাকা ৩০৭ জন যাত্রী ও ১৯ জন ক্রূর মধ্যে কেউ হতাহত হয়নি ।[৩৭]
১০ সেপ্টেম্বর ২০০৮ ঃ এয়ার এরাবিয়া ফ্লাইট ৫২২ এর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরচট্টগ্রাম যাওয়ার সময় একজন বিমান কর্মী একটি চিরকুট খুঁজে পায় যেখানে লেখা ছিল যে বিমানটিতে বোমা আছে । চট্টগ্রামে অবতরণ করার পর বিমানটি খোঁজা হতেও তাতে কোন বোমা পাওয়া যায় নি ।নাসির উদ্দিন নামের বিমানের এক যাত্রী এই ধোঁকাবাজির জন্য দোষী প্রমাণিত হয়।এই ঘটনায় যাত্রীদের মদ্ধে উদ্বেগ ছড়িয়ে পরে এবং বিমানটিকে অতিরিক্ত দুঘণ্টা চট্টগ্রামে থাকতে হয়।[৩৮]
বাংলাদেশ আমল (সাম্প্রতিক)
১ মার্চ ২০১২ ঃ আনুমানিক বিকাল ৪ টার সময় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের ২য় তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে কেউ হতাহত হয়নি।বিমান বন্দর দমকল বাহিনী ছয় টার মদ্ধে আগুন নেভাতে সমর্থ হয়। [৩৯]
৩০ এপ্রিল ২০১২ ঃ একটি রাজকীয় থাই বিমান বাহিনীর এ টি আর ৭২-২১২ বিমান জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় পরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।বিমানটি রানওয়ে স্বল্পতায় একটি কনক্রিট এর বাঁধার সাথে থেমে যায় এতে বিমানের ডান পাখা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।দুজন যাত্রী সামান্য আহত হয়।[৪০]
১৩ আগস্ট ২০১২ ঃ ১০ জন যাত্রী নিয়ে একটি এ টি আর ৭২-২১২ ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ফ্লাইট ৫৪৬ ঢাকা থেকে যশোরে যাওয়ার পথে ভূমি থেকে ৯০০০ মিটার উচ্চতায় উচ্চচাপের জন্য সহকারী চালকের সামনের কাঁচ ভেঙ্গে যায় ।চালক বিমানটিকে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করাতে সক্ষম হয় ।সহকারী চালকের চোখ আহত হত ।[৪১][৪২]
১৩ মে ২০১৫ ঃ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এম আই ১৭ হেলকপ্টার প্রশিক্ষণ উড্ডয়নের সময় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় এবং আগুন ধরে যায়। তিন আরোহীর প্রত্যেকেই মারাত্মক ভাবে আহত হয়।[৪৩]
২৯ জুন ২০১৫ ঃ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ ৭-এম বি প্রশিক্ষণ বিমান চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর পতেঙ্গা সৈকত থেকে ৬ মাইল দূরে বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয়। বিমান চালক ফ্লাইট লেঃ রুম্মান তাহমিদ নিখোঁজ হন।[৪৪ ৪৫ ]
María del Pilar Ortega Martínez Diputada del Congreso de la UniónPlurinominal 1 de septiembre de 2018-31 de agosto de 2021 1 de septiembre de 2006-31 de agosto de 2009 Senadora del Congreso de la UniónLista Nacional 11 de octubre de 2012-3 de abril de 2018Predecesor Alonso Lujambio Información personalNacimiento 29 de junio de 1968 (55 años)León, Guanajuato Nacionalidad MexicanaInformación profesionalOcupación PolíticaPartido político Partido Acción Nacional[editar datos en W...
Ecuadorian sports club based in Guayaquil Not to be confused with FC Barcelona. Football clubBarcelona SCFull nameBarcelona Sporting ClubNickname(s)Ídolo del Ecuador (Ecuador's Idol) Ídolo del Astillero (Shipyard's Idol) Toreros (Bullfighters) Founded1 May 1925; 98 years ago (1925-05-01)GroundEstadio Monumental Banco PichinchaCapacity59,283ManagerDiego LópezLeagueSerie A20225th (Finals Runner Up)WebsiteClub website Home colours Away colours Third colours Current season Ba...
Porträt Emmanuel Joseph Sieyès’ von Jacques-Louis David aus dem Jahr 1817. Sieyès’ Unterschrift: Emmanuel Joseph Sieyès (seit 1808 Graf), auch: l’abbé Sieyès (* 3. Mai 1748 in Fréjus; † 20. Juni 1836 in Paris), war ein französischer Priester (Abbé) und Staatsmann, einer der Haupttheoretiker der Französischen Revolution und der Ära des Französischen Konsulats. Sein wohl bekanntestes Werk war Qu'est-ce que le Tiers-État? (Was ist der Dritte Stand?) vom Januar 1789...
Гран-прі Великої Британії 2006 LIX Foster's British Grand Prix 8-й з 18 етапів сезону 2006/ Гонка №758 ← 7.Монако • 9.Канада → Дата 11 червня 2006 року Місце Сільверстоун Траса Сільверстоун Довжина кола 5.141 км Дистанція 308.355 км (60 кіл) Погода Мінлива хмарність, спекотно, сухо. Поул 1:20.253 ...
Honduran general and politician (1792–1842) For ships named Francisco Morazan, see SS Francisco Morazan. For the Honduran department, see Francisco Morazán Department. For the Salvadoran department, see Morazán Department. In this Spanish name, the first or paternal surname is Morazán and the second or maternal family name is Quesada. Francisco Morazán2nd President of Central AmericaIn office14 February 1835 – 1 February 1839Preceded byJosé Salazar (interim)Succeeded...
Чернявський Олександр Іванович Старший сержант Загальна інформаціяНародження 9 квітня 1986(1986-04-09)СколобівСмерть 15 лютого 2015(2015-02-15) (28 років)ДебальцевеПсевдо «Кіборг»Військова службаПриналежність УкраїнаВид ЗС Сухопутні військаРід військ Механізовані військ...
Village in Kuyavian-Pomeranian Voivodeship, PolandGórna GrupaVillageGórna GrupaCoordinates: 53°28′59″N 18°40′0″E / 53.48306°N 18.66667°E / 53.48306; 18.66667Country PolandVoivodeshipKuyavian-PomeranianCountyŚwiecieGminaDragaczPopulation580 Górna Grupa (Polish pronunciation: [ˈɡurna ˈɡrupa]) is a village in the administrative district of Gmina Dragacz, within Świecie County, Kuyavian-Pomeranian Voivodeship, in north-central Poland.[1...
This article does not cite any sources. Please help improve this article by adding citations to reliable sources. Unsourced material may be challenged and removed.Find sources: Gambir, Gambir – news · newspapers · books · scholar · JSTOR (March 2012) (Learn how and when to remove this template message) Administrative village in Jakarta, IndonesiaGambirAdministrative villageGambirLocation in JakartaCoordinates: 6°10′S 106°49′E / 6....
Astronauts, cosmonauts and tourists to the Russian space station This is a list of visitors to the Mir space station in alphabetical order. Station crew names are in bold. The suffix (twice) refers to the individual's number of Mir visits, not their total number of space flights. Entries without a flag symbol indicate that the person was a citizen from the bloc of countries comprising the former Soviet Union at launch. Statistics Between 1986 and 2000, 104 individuals visited the Mir space st...
2013 single by Avicii Wake Me Up! redirects here. For the song by Speed, see Rise (Speed album). Wake Me UpSingle by Aviciifrom the album True Released17 June 2013Genre Folktronica country house Length4:09Label PRMD Lava Columbia Songwriter(s) Tim Bergling Egbert Dawkins Mike Einziger Producer(s) Avicii Arash Pournouri Avicii singles chronology We Write the Story (2013) Wake Me Up (2013) You Make Me (2013) Audio sample16-second sample of Avicii's single Wake Me Up.filehelpMusic videoWake Me U...
French cardinal For homonyms, see Charles of Lorraine (disambiguation). This article needs additional citations for verification. Please help improve this article by adding citations to reliable sources. Unsourced material may be challenged and removed.Find sources: Charles, Cardinal of Lorraine – news · newspapers · books · scholar · JSTOR (January 2015) (Learn how and when to remove this template message) His EminenceCharles de LorraineCardinal, Arch...
Metro station in Sendai, Japan T12Rokuchonome Station六丁の目駅 Sendai Subway stationThe South 1 entrance in December 2015General informationLocationWakabayashi-ku, Sendai-shi, Miyagi-ken 984-0012JapanCoordinates38°15′04″N 140°56′08″E / 38.2510°N 140.9356°E / 38.2510; 140.9356Operated bySendai City Transportation BureauLine(s)Tōzai LineDistance12.3 km (7.6 mi) from Yagiyama Zoological ParkPlatforms1 island platformTracks2ConstructionStructur...
Cambodian judge This article has multiple issues. Please help improve it or discuss these issues on the talk page. (Learn how and when to remove these template messages) This article is an orphan, as no other articles link to it. Please introduce links to this page from related articles; try the Find link tool for suggestions. (April 2019) This biography of a living person needs additional citations for verification. Please help by adding reliable sources. Contentious material about living pe...
Italian-American mobster and crime boss Frank Coppola. Frank Coppola (born Francesco Paolo Coppola; 1899 in Partinico – 26 April 1982 in Aprilia), known as Frank Three Fingers, was an Italian-American mobster and crime boss. Background Frank Coppola was born in Partinico, Sicily, Italy in 1899. In 1926 he emigrated clandestinely to the United States and settled in Detroit. He worked as a laborer and then as a seller of fruit and vegetables, before entering the mob. He was known as Frank Thr...
H-class destroyer, launched 1936 For other ships with the same name, see HMS Hero and HMCS Chaudière. Hero during the Interwar period History United Kingdom NameHero BuilderVickers-Armstrongs, High Walker Yard number4 Laid down28 February 1935 Launched10 March 1936 Commissioned23 October 1936 IdentificationPennant number: H99 FateTransferred to the Royal Canadian Navy on 15 November 1943 Canada NameChaudière Commissioned15 November 1943 Decommissioned17 August 1945 Stricken19 March 1946 Hon...
هذه المقالة يتيمة إذ تصل إليها مقالات أخرى قليلة جدًا. فضلًا، ساعد بإضافة وصلة إليها في مقالات متعلقة بها. (يناير 2024) القيمة£0.10السمك(نيكل نحاسي) 1.85 ملم(فولاذ) 2.05 ملممكون مننيكل نحاسي (1971–2010)نيكل- فولاذ (2011–)سنوات السك1968–مستمروجه العملةالتصميمإليزابيث الثانيةالمصممجود...
Tibetan scholar, thinker, writer, poet, linguist and artist A portrait of Gendün Chöphel while in India (1936) Chöphel (right) with Rakra Tethong Rinpoche [fr] standing in front of the Potala Palace in Lhasa (c. 1949) Gendun Chompel or Gendün Chöphel (Tibetan: དགེ་འདུན་ཆོས་འཕེལ།, Wylie: dge 'dun chos 'phel)[1] (1903–1951) was a Tibetan scholar, thinker, writer, poet, linguist, and artist. He was born in 1903 in Shompongshe,...