পেপ্যাল একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অর্থের স্থানান্তর বা হাতবদল করার ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়ে থাকে। অনলাইন স্থানান্তরের এই পদ্ধতি গতানুগতিক অর্থের লেনদেনের পদ্ধতি যেমন চেক বা মানি অর্ডারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
একটি পেপ্যালের একাউন্ট খোলার জন্য কোন ব্যাঙ্ক একাউন্টের ইলেকট্রনিক ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ডের প্রয়োজন পড়ে। পেপ্যালের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহক পেপ্যাল কর্তৃপক্ষের নিকট চেকের জন্য আবেদন করতে পারে, অথবা নিজের পেপ্যাল একাউন্টের মাধ্যমে খরচ করতে পারে অথবা তার পেপ্যাল একাউন্টের সাথে সংযুক্ত ব্যাঙ্ক একাউন্টে জমা করতে পারে।
পেপ্যাল অনলাইন বিক্রেতাদের জন্য অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে, এছাড়াও অনলাইন, নিলামের ওয়েবসাইট, ও অন্যান্য বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট পেপ্যালের সেবা গ্রহণ করে যার জন্য পেপ্যাল ফী বা খরচ নিয়ে থাকে। এছাড়াও অর্থ গ্রহণের জন্যেও ফী নিয়ে থাকে যা মোট গৃহীত অর্থের সমানুপাতিক হয়ে থাকে। এই ফী বা খরচ নির্ভর করে কোন দেশের মূদ্রা ব্যবহার হচ্ছে, কীভাবে অর্থের লেনদেন হচ্ছে প্রেরক ও প্রাপকের দেশ, পাঠানো অর্থের পরিমাণ ও প্রাপকের একাউন্টের ধরনের ওপরে।[২] এছাড়াও, ই-বে ওয়েবসাইট থেকে পেপ্যালের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করলে পেপ্যাল আলাদা অর্থ গ্রহণ করতে পারে যদি ক্রেতা ও বিক্রেতা ভিন্ন মূদ্রা ব্যবহার করে।
২০০২ সালের ৩রা অক্টোবর পেপ্যাল বৃহৎ নিলাম সাইট ই-বের অঙ্গপ্রতিষ্টান হিসেবে মালিকানা পরিবর্তন করে।[৩]যুক্তরাষ্ট্রেরক্যালিফোর্নিয়ার, সান জোসে, শহরে পেপ্যালের প্রধান শাখা অফিস যা ই-বের নর্থ ফার্স্ট স্ট্রীট স্যাটেলাইট অফিসে অবস্থিত। এছাড়াও এই প্রতিষ্টানের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড রয়েছে নেব্রাস্কার ওমাহা ; আরিজোনার স্কটডেল; এবং অস্টিন টেক্সাস যুক্তরাষ্ট্রের. মধ্যে, এছাড়াও রয়েছে চেন্নাই, ডাবলিন, ক্লিয়েনম্যাকনো (বার্লিনের নিকটে) এবং তেল আভিভ. জুলাই ২০০৭ পর্যন্ত, সমগ্র ইউরোপে পেপ্যাল একটি লুক্সেমবুর্গ-ভিত্তিক ব্যাঙ্ক হিসেবে পরিচালিত হয়।
২০১০ সালের মার্চের ১৭ তারিখে পেপ্যাল চীনের ব্যাঙ্ককার্ড সমিতি চায়না ইউনিয়ন পে (সিইউপি)র, সাথে সমঝোতায় আসে যা চীনের ভোক্তাদের পেপ্যালের মাধ্যমে অনলাইনে কেনাকাটা করতে সুযোগ করে দেবে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পেপ্যাল ২০১০ সালের শেষ নাগাদ এশিয়া মহাদেশে তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ২০০০ এ উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে।[৪][৫][তারিখের তথ্য]
২০১০ সালের ৪-৯ তারিখের মধ্যে পেপ্যালের সেবা ব্যাহত হয় ডিনায়াল অফ সার্ভিস আক্রমণের কারণে যেটি সংগঠিত করেছিল এনোনিমাস। যা ছিল তাদের প্রতিবাদ পেপ্যাল কর্তৃক উইকিলিকস এর একাউন্ট জব্দের বিপরীতে। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক কেবল অনলাইনে ফাঁস করে পেপ্যালের চুক্তির নিয়মাবলী ভঙ্গ করে বলে অভিযোগ জানায় পেপ্যাল .[৬][৭][৮][৯]
ইতিহাস
সূচনা
পেপ্যালের বর্তমান প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি হয় ২০০০ সালে কনফিনিটি এবং এক্স ডট কমের একত্রীকরণের মাধ্যমে [১০] ম্যাক্স লেভচিন, পিটার থিয়েল এবং লুক নসেক ১৯৯৮ সয়ালে কনফিনিটি স্থাপন করেন মূলত পাম পাইলটের আর্থিক লেনদেন সুবিধা ও গুপ্তসঙ্কেত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে।[১১] এলন মাস্ক ১৯৯৯ সনে এক্স ডট কম চালু করেন অনলাইন আর্থিক প্রিসেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে।
এক্স ডট কম ও কনফিনিটি উভয়েই ১৯৯৯ সনের শেষভাগে তাদের ওয়েবসাইট চালু করে [১২] উভয় প্রতিষ্ঠানই পালো আলটোর ইউনিভার্সিটি এভিনিউতে অবস্থিত ছিল। কনফিনিটির ওয়েবসাইট পাম পাইলট থেকে পাঠানো অর্থপ্রদান মিলনসাধন করার ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে ফোকাস করা হয়ে ছিল।[১৩] এবং এক্স ডট কম ওয়েবসাইটে একটি বৈশিষ্ট্য হিসেবে ই-মেল অর্থপ্রদানের সঙ্গে একটি বৈশিষ্ট্য হিসেবে ই-মেল অর্থপ্রদানের সঙ্গে আর্থিক পরিষেবা প্রাথমিকভাবে যুক্ত ছিল।
কনফিনিটির অধিকাংশ প্রাথমিক নিয়োগপ্রাপ্তরা ছিলেন দি স্ট্যানফোর্ড রিভিউ র সদস্য, যেটিও পিটার থিয়েল শুরু করেছিলেন, আর কম্পিউটার প্রকৌশলীদের অধিকাংশই ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ আরবানা শ্যামপেনএর প্রাক্তন ছাত্র, যাদের নিয়োগ দিয়েছিলেন ম্যাক্স লেভচিন। অপর দিকে এক্স ডট কম এর দিকে ইলন মাস্ক বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রযুক্তি ও ব্যবসা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের নিজের প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেন যাদের অবদান প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেমন এমি ক্লেমেন্ট, সাল গিয়ামবাঞ্চো, রোয়েলফ বোথা [১৪] সেকুইয়া ক্যাপিটাল থেকে, সঞ্জয় বারগাভা এবং জেরেমি স্টপেলম্যান। [১৫]
স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম কর্তৃক প্রতারণামূলক ব্যবহার ঠেকানোর জন্য পেপ্যাল একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে (দেখুন ক্যাপচা) যেখানে ব্যবহারকারীকে একটি অস্পষ্ট ছবি দেখে তার শব্দটি সিস্টেমে প্রবেশ করাতে হয়। তার এই পদ্ধতির নাম দেন গসব্যাক-লেভচিন পরীক্ষা। [১৬]
ই-বে এর অনলাইন অর্থপ্রদানের পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়া পর্যবেক্ষণ করেছিল এবং অনলাইন নিলাম করার সঙ্গে একটি অনলাইন অর্থপ্রদান পদ্ধতির উপযোগীতা অনুভব করেছিল। ই-বে ১৯৯৯ সালের মে মাসে বিলপয়েন্ট কে কিনে নেয়, তখনো পেপ্যালের জন্ম হয়নি। ই-বে বিলপয়েন্টকে তাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে অর্থপ্রদান পদ্ধতি হিসেবে অনুপ্রবেশ করায়, " ই-বে পেমেন্টস " নামে। কিন্তু শুধুমাত্র ই-বেতে নিলাম করার জন্য কেবল অর্থপ্রদানে এর কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখে এর অবস্থান অনেক সীমাবদ্ধ করে ফেলে। এই কারণে অনেক বেশি সংখ্যক নিলাম পেপ্যালের মাধ্যমে তালিকাভূক্ত হয় বিলপয়েন্ট ব্যবহার না করে। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিদিন পেপ্যালের মাধ্যমে প্রায় ২০০,০০০০ নিলাম তালিকাভূক্ত হত আর বিলপয়েন্টের মাধ্যমে মাত্র ৪০০০। [১৭][১৮][১৯] ২০০০ সালের এপ্রিল মাস্র মধ্যে ১০ লক্ষের বেশি নিলাম পেপ্যালের মাধ্যমে তালিকাভূক্ত হওয়া শুরু হয়।[২০] পেপ্যাল তাদের সমস্যা কাটিয়ে উঠে ১১ই সেপ্টেম্বরের হামলার পরে প্রথম ডট-কম কোম্পানী হিসেবে আইপিও বাজারে ছাড়ে.[২১]
ই-বে কর্তৃক অধিগ্রহণ
ই-বে ২০০২ সালের অক্টোবার মাসে ১৫০ কোটি ডলারের বিনিময়ে কিনে নেয়। [২২] ইতোমধ্যে ই-বের অর্ধেকের বেশি ব্যবহারকারী পেপ্যালের মাধ্যমেই কেনাকাটা করতেন এবং পেপ্যালের সেবা সরাসরি প্রতিযোগিতা করত ই-বের নিজস্ব অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিলপয়েন্ট, সিটিব্যাঙ্কএর c2it, যার সেবা ২০০৩ সালে বন্ধ হয়ে যায়, এবং ইয়াহু!র সাথেযাদের পে ডায়রেক্ট নামে সেবা ছিল যা ২০০৪ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ২০০৫ সালে ঘোষণা দেয় তাদের বিড পে সেবা বন্ধ করে দেবার যদিও পরবর্তীকালে তারা ২০০৬ সালে এই সেবা বিক্রী করে দেয় সাইবার সোর্স কর্পোরেশনের কাছে।
পরবর্তীতে ২০০৭ সালের ৩১শে ডিসেম্বর বিড পের সমগ্র কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। অন্যান প্রতিযোগীরা যারা পেপ্যালের মত একই ধরনের সেবা দিয়ে থাকে যেমন গুগল চেকাউট, ওয়্যারকার্ড,এবং মানিবুকার্স এখনো ব্যবসায় টিকে আছে, যদিও বাস্তবতা হল, বর্তমানে ই-বে বাধ্যতামূলক করেছে অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্যের সাইটের সকল ব্যবহারকারীকে পেপ্যাল ব্যবহার করা। [২৩][২৪]
যদিও পরবর্তীকালে ই-বে তাদের অবস্থান থেকে নমনীয় হয়ে সরে আসে এবং জানায় যে অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্যের ই-বের বিক্রেতারা তাদের অর্থগ্রহণের সুযোগসমূহের অন্তত একটি হিসেবে পেপ্যালকে ব্যবহার করতে হবে, একমাত্র না হলেও চলবে। [২৫] স্বীকৃত অন্যান্য পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যাঙ্কে জমা, চেক এবং মানি অর্ডার, ইস্ক্রো এবং ক্রেডিট কার্ড (পেপ্যাল ছাড়া অন্যদের কর্তৃক ব্যবহৃত)।[২৬]
২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে পেপ্যাল ফ্রড সাইন্স নামে ইজরাইলএর ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি নতুন প্রতিষ্ঠানকে যারা অনলাইন ঝুঁকির বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কিনে নিতে সম্মত হয় ১৬৯ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে।[২৭] ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে পেপ্যাল বিল মি লেটার, নামে একটি অনলাইন অর্থ আদানপ্রদানের প্রতিষ্ঠানকে কিনে নেয় যারা আমেরিকার ১০০০ এর বেশি অনলাইন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে লেনদেনের ক্ষেত্রে ঋণসুবিধা দিয়ে থাকে।[২৮]
২০০৮ সালে পেপ্যালের মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬০ বিলিওন ডলার যা পূর্বের বছরের চেয়ে ২৭% বেশি।,[২৯] এবং ৭১ বিলিওন ডলার যা পূর্বের বছরের চেয়ে ১৯% বেশি। [৩০] প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত তাদের আন্তর্জাতিক কলেবর বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, একই সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেন ই-বের বাইরে বৃদ্ধির জন্যেও কাজ করে যাচ্ছে।
আজকের ব্যবসার ধরন
বর্তমানে, পেপ্যাল ১৯০টি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে, এবং এটি ২৩.২ কোটির বেশি অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে, তাদের মাঝে সক্রিয় অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৮.৭ কোটিরও বেশি। পেপ্যাল ২৪ টি মূদ্রায় গ্রাহকদের অর্থ পাঠাতে, গ্রহণ করতে ও অর্থ সংরক্ষণ করার সুযোগ দিয়ে থাকে। [২৯] এই মূদ্রাগুলো হল অস্ট্রেলিয়ান ডলার, ব্রাজিলের রিয়েল, কানাডার ডলার, চীনের ইউয়ান (শুধুমাত্র কিছু চীনা একাউন্টে ব্যবহারযোগ্য), ইউরো, পাউন্ড স্টার্লিং, জাপানী ইয়েন, চেক ক্রোনা, ডেনিশ ক্রোন, হংকং ডলার, হাঙ্গেরীর ফ্রইন্ট, ইজরাইলের নতুন শেকেল, মালেশিয়ার রিঙ্গিত, মেক্সিকোর পেসো, নিউজিল্যান্ডের ডলার, নরওয়ের ক্রোন, ফিলিপাইনের পেসো, পোল্যান্ডের যোলটি, সিঙ্গাপুরের ডলার, সুইডেনের ক্রোনা, সুইস ফ্র্যাঙ্ক, নতুন তাইওয়ানের ডলার, থাই ভাত এবং U.Sআমেরিকান ডলার পেপ্যাল স্থানীয়ভাবে ২১ টি দেশে কাজ করে।
১৯৪ টি দেশের অধিবাসীগণ [স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] স্থানীয় বাজারে পেপ্যাল ব্যবহার করে অনলাইনে অর্থ প্রেরণ করতে পারে।
২০০৯এর প্রথম চতুর্থাংশে পেপ্যাল রাজস্ব ছিল ৬৪৩ মিলিয়ন ডলার যা পূর্বের বছরের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি ছিল। ২০০৯ এর প্রথম চতুর্থাংশের রাজস্বের ৪২ শতাংশ আসে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে। ২০০৯ সালের প্রথম চতুর্থাংশে পেপ্যালের মোট আদান প্রদানের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬ বিলিয়ন যা পূর্বের বছরের প্রায় শতকরা ১০ ভাগ বেশি। [৩১]
২০০৮ সালে প্রথমবারের মত পেপ্যালের লেনদেনের পরিমাণ ই-বের চেয়ে বেশি হয়ে যায়। পেপ্যালের আর্থিক আদান প্রদানের পরিমাণ ২০০৮ সালে ছিল প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার যা বিশ্বের ই-কমার্সের প্রায় শতকরা ৯ভাগ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ই-কমার্সের প্রায় ১৫ ভাগ। [৩২]
বিশ্লেষকদের এক সম্মেলনে ২০০৯ সালের ১১ই মার্চ প্রধান নির্বাহী জন ডোনাহো ঘোষণা করেন যে সম্ভবত ই-বের থেকে পেপ্যাল এর মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠান অধিক অর্থ উপার্জন করছে। [৩৩] রিম (রিসার্চ ইন মোশন) ঘোষণা করে ২০০৯ সালের পহেলা এপ্রিল তারিখে যে তাদের ব্ল্যাকবেরী এপওয়ার্ল্ডের একমাত্র অর্থ লেনদেনের মাধ্যম হবে পেপ্যাল।[৩৪]
পেপ্যাল ছাত্রদের জন্য একটি বিশেষ একাউন্ট চালু করে আগস্ট ২০০৯ থেকে, যেখানে পিতামাতা পেপ্যালের একাউন্ট খুলে তাতে অর্থ স্থানান্তর করতে পারে এবং ছাত্র ব্যবহারের জন্য একটি নগদ (ডেবিট) কার্ড অর্জন করে। এই প্রক্রিয়াটি কিশোর তরুণদের শিক্ষা প্রদান করতে সরঞ্জাম জোগান দেয় কীভাবে বুদ্ধিমত্তার সাথে টাকা খরচ করতে এবং তাদের কর্মফলের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করতে শেখায়। [৩৫][৩৬]
২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে পেপ্যাল তাদের মঞ্চ বা প্ল্যাটফর্ম উন্মুক্ত করে যেখানে অন্যান্য পরিষেবা পেপ্যালের কোড ব্যবহার করে পরস্পরের মধ্যে অনলাইনে আর্থিক লেনদেন করতে পারে। [৩৭]
পেপ্যালের প্রাতিষ্ঠানিক সদর দফতর সান জোসেতে হলেও, তাদের মূল কর্মকেন্দ্র নেব্রাস্কার ওমাহায় অবস্থিত, যেখানে ২০০৭ সালের হিসেব অনুযায়ী তাদের প্রায় ২০০০ কর্মচারী কর্মরত আছেন। [৩৮] পেপ্যালের ইউরোপীয় সদর দফতর লুক্সেমবার্গ এবং সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক সদর দফতর আছে। ২০০৭ সালের অক্টোবরে পেপ্যাল ডাটা সার্ভিস কার্যালয় অস্টিনের উত্তর অংশে চালু করে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি সাম্প্রতিক সময়ে টেমপ্লেট:When? প্রযুক্তি কেন্দ্র খোলে আরিজোনার স্কটসডেল, এবং চেন্নাই, ভারতে.
পেপ্যালের ব্যবসার ধরনের ক্রমবিকাশ
পেপ্যালের ব্যবহারকারীদের সংখ্যা এবং একই সাথে লেনদেনের পরিমাণের সাফল্যের পেছনে তিন ধাপে উন্নয়নের কথা বলেছেন ই-বের সিইও মেগ হুইট্ম্যান প্রথমে পেপ্যাল তার মনোযোগ নিবদ্ধ করে আমেরিকার ই-বের গ্রাহকদের কাছে তাদের সেবা পৌঁছে দিতে, তারপরে আমরা চেষ্টা করি ই-বের আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের নিকটেও আমাদের সেবাকে জনপ্রিয় করতে। তৃতীয়ত আমরা শুরু করি ই-বের বাইরের গ্রাহকদের নিকট আমাদের ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করতে। ”.[৩৯]
ধাপ-১
প্রথম ধাপে লেনদেনের মূল অংশ আসছিল ই-বের নিলামের ওয়েবসাইট থেকে। এই পদ্ধতিটি নিলামের বিক্রেতাদের জন্য খুবই লোভনীয় ছিল, কারণ তাদের অধিকাংশই ছিলেন একজন ব্যক্তি অথবা ক্ষূদ্র ব্যবসায়ী, যারা নিজেরা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণে অপারগ ছিলেন। একই সাথে ক্রেতাদের জন্যেও এটি সুবিধাজনক পদ্ধতি ছিল।প্রকৃতপক্ষে অধিকাংশ বিক্রেতাই "মার্চেন্ট একাউন্ট" খোলার যোগ্যতাসম্পন্ন ছিলেন না কারণ তাদের বাণিজ্যিক ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের ইতিহাস ছিল না। পেপ্যালের সেবা নিলামের সাইটের ক্রেতাদের কাছেও আকর্ষণীয় ছিল এই কারণে যে তারা তাদের মূল্য পরিশোধ ক্রেডিট কার্ড অথবা ব্যাঙ্ক একাউন্টের টাকার মাধ্যমে পরিশোধের সুযোগ পেত অপরিচিত কোন বিক্রেতা বা ব্যক্তির কাছে তার গোপনীয় তথ্য প্রকাশ না করেই। পেপ্যাল একটি অগ্রাসী বিজ্ঞাপনী প্রচার অভিযান চালায় তার বৃদ্ধি দ্রুততর করার জন্য। প্রতিজন নতুন ব্যবহারকারী পেপ্যালের থেকে ১০ ডলার করে পেতেন (একই সাথে প্রতিজন নতুন ব্যক্তিকে উৎসাহিত করার জন্য আরো ১০ ডলার )।
ধাপ-২
পেপ্যালের ভঙ্গুর ব্যবসানীতি ছিল ২০০০ সালের সবচেয়ে বড় সমস্যা। প্রাথমিকভাবে পেপ্যাল তাদের সেবা বিনামূল্যে দেয়া শুরু করে, এই পরিকল্পনায় যে, ব্যবহারকারীদের গচ্ছিত অর্থের ওপরের সূদ থেকে তার অর্থ উপার্জন করবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখা গেল অধিকাংশ ব্যবহারকারীই তাদের অর্থ তৎক্ষনাত বের করে নিচ্ছেন। এছাড়াও প্রেরকদের একটি বড় অংশ তাদের অর্থ প্রেরণের জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করছেন যা পেপ্যালকে মোট লেনদেনের পরিমাণের প্রায় শতকরা ২ ভাগ করে দেয়া লাগছে, কিন্তু খুব কম ক্রেতাই ব্যাঙ্ক একাউন্ট ব্যবহার করছেন যার খরচ অনেক কম।
ই-বের যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পেপ্যাল ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ভার্চুয়াল পৃথিবীর লেনদেনের ক্ষেত্রে চিরায়ত সমস্যাগুলোর সমাধানের দিকে নজর দেয়। যেমন প্রতারণা, দায়বদ্ধতা, অভিযোগ নিরসন ইত্যাদি ( লেনদেনের ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতি পেপ্যাল বহন করে, এছাড়াও ক্রেতা ও বিক্রেতার নিরাপত্তার প্রোগ্রামের দায়িত্ব পেপ্যাল নেয়) প্রকৃতপক্ষে যখন কোন বিক্রেতা দেউলিয়া হয়ে যায়,
যা অনলাইন কেনাবেচার ক্ষেত্রে খুব দূর্লভ নয়, তখন পেপ্যাল দায়িত্ব নেয় দেউলিয়া হয়ে যাওয়া বিক্রেতার পক্ষ থেকে যেসকল টাকা পাওনা আছে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সেগুলো পরিশোধ করে দেয়া। একই ভাবে ক্রেতাদের তাদের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অননুমোদিত ব্যবহারের বিরুদ্ধে পেপ্যালের পক্ষ থেকে সুরক্ষা দেয়া হয়। এর সাথে, ই-বের ক্রেতাদের যারা পেপ্যাল ব্যবহার করছেন তাদের ১০০০ ডলার পর্যন্ত সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয়া হয়, (এক বছরে ৩ বার পর্যন্ত) যখন তাদের ক্রয়কৃত পণ্য সময়মত পৌছায় না, অথবা পণ্যের বর্ণনার সাথে সরবরাহকৃত পণ্যের অবস্থার অমিল দেখা যায়,
শুধুমাত্র সেইসব বিক্রেতাদের জন্য যাদের ফীডব্যাক রেটিং বেশি। সর্বশেষ, ব্যবসা একাউন্ট সংবলিত বিক্রেতাদের বিক্রেতা নিরাপত্তা প্রকল্পের সহায়তা দেয়া হয় ৫০০০ ডলার পর্যন্ত, যেখানে বিক্রেতাদের চার্জব্যাকের বিপরীতে সুরক্ষা দেয়া হয়, যখন তারা অর্থ ফেরত দেবার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করে। (যেমন নিশ্চিত ঠিকানায় পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে পণ্য পাঠানোর প্রমাণ বা রশিদ সংরক্ষণ অথবা ২৫০ ডলারের অধিক মূল্যের পণ্যের ক্ষেত্রে পণ্য গ্রহণের সময় ক্রেতার সই নেবার নীতি ইত্যাদি)
ধাপ-৩
পেপ্যালের ব্যবসা পদ্ধতি পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ ও উন্নয়ন এবং স্থানীয় (আমেরিকা) ও ই-বের লেনদেনের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরে, পেপ্যাল তাদের ই-বের বাইরের ব্যবসার দিকে মনোযোগ দেয়। যদিও ই-বের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি ক্রমান্বয়ে মন্থর হয়ে শতকরা এক একাঙ্কে নেমে আসে, তবুও ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাবার কারণে বেড়েই চলে। ২০০৩ সালের শেষদিকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে পেপ্যাল তার একটি নতুন ব্যবসা শাখা খোলে মার্চেন্ট সার্ভিস নামে। যার উদ্দেশ্য ছিল ই-বের বাইরের ক্ষূদ্র থেকে বড় পর্যন্ত ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের অনলাইন লেনদেনের সুবিধা দেয়া। ২০০৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে পেপ্যালের মার্চেন্ট সার্ভিস বেশ কিছু উদ্যোগ নেয় ই-বের নিলামের বাইরের অনলাইন ব্যবসায়ীদের তাদের সেবা নিতে উৎসাহিত করতে। যেমনঃ
অধিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের ফী ২.২% থেকে কমিয়ে ১.৯% এ নামিয়ে আনা। (একই সাথে উচ্চ লেনদেনের সীমা বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ১০০,০০০ ডলারে উন্নীত করা)
ই-বের বাইরের ব্যবসায়ী/বিক্রেতাদের পেপ্যাল ব্যবহারের জন্য সুপারিশের জন্য পুরস্কারের পরিমাণ বাড়িয়ে ১০০০ ডলার করা (যা আগে ১০০ ডলার ছিল)।
ক্রেডিট কার্ড প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান যেমন সাইবারসোর্স এবং রিটেইল ডিসিশনস ইউএসএ কে অনুপ্রাণিত করা যেন তারা তাদের অনলাইন বিক্রেতাদের সুবিধাসমূহের মধ্যে পেপ্যালকেও অন্তর্ভুক্ত করে নেয়।
ডেল, এপেলের আইটিউনস এবং ইয়াহুর মত বৃহৎ অনলাইন প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বিক্রয় ও বিপণন বিভাগে লোক নিয়োগ করা।
যেখানে হাজারো অনলাইন বিক্রেতাদের সমাগম হয়।
অনলাইনে সংগীত বিক্রয় ও অন্যান্য ক্ষূদ্র বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ফী এর পরিমাণ কমানো।
পেপ্যাল মোবাইলের উদ্বোধন করা, যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের মোবাইল ফোনে ক্ষূদেবার্তা প্রেরণের মাধ্যমে অর্থপ্রেরণ করতে পারবেন।
স্থানীয় বিধিনিষেধ
চীন
চীনে পেপ্যাল দু-ধরনের একাউন্ট এর সুবিধা দিয়ে থাকে।
পেপ্যাল ডট কম একাউন্ট, এটি অন্য পেপ্যাল ডট কম একাউন্টের সাথে অর্থ লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। চীনের বাইরের সকল একাউন্ট পেপ্যাল ডট কম একাউন্ট। তাই সেগুলো আন্তর্জাতিক ভাবে অর্থ গ্রহণ ও প্রেরণের জন্য ব্যবহার হতে পারে।
পেপ্যাল ডট সিএন একাউন্ট যেটি পেপ্যালের চীনা ব্যবহারকারীদের মধ্যে অর্থের আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
পেপ্যাল সিএন ও পেপ্যাল ডট কমের একাউন্টের মধ্যে লেনদেন সম্ভব না। তাই পেপ্যাল সিএন এর ব্যবহারকারীরা প্রকৃতপক্ষে আন্তর্জাতিক লেনদেন থেকে বঞ্চিত থাকেন। পেপ্যাল সিএন এর ব্যবহারকারীদের জন্য একমাত্র মূদ্রা হল রেনমিনিবি.
জাপান
২০১০ সালের মার্চ মাসের শেষ দিকে জাপানের নতুন ব্যাঙ্কিং আইনের আওতায় পেপ্যালের ব্যক্তিগত একাউন্টধারীদের মধ্যে ব্যক্তিগত হিসেবের আওতায় লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে ব্যক্তিগত লেনদেনও ব্যবসায়ীক হারে কমিশন ফী কাটা হয়।[৪০][৪১]
তাইওয়ান
২০১০ সালে জুলাই মাসের মাঝামাঝি তাইওয়ানের ব্যবহারকারীরা লক্ষ করেন যে কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই "ব্যক্তিগত" ট্যাবটি তাদের একাউন্ট থেকে নাই হয়ে গেছে। ফলে বর্তমানে ব্যক্তিগত অর্থপ্রেরণের সুযোগ আর নেই। ফলে অর্থগ্রহীতাকে বাধ্যতামূলকভাবে ফী প্রদান করা লাগে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ব্রাজিল
২০১০ সালের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি ব্রাজিলের ব্যবহারকারীরাও তাদের অর্থপ্রেরণের জন্য ব্যক্তিগত ট্যাবটিকে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই নাই হয়ে যেতে দেখেন। তাই বর্তমানে ব্যক্তিগত লেনদেনের কোন সুযোগ নেই ফলে প্রাপককে অবশ্যই ফী দেয়া লাগে। একই ব্যবহারকারীর পেপ্যাল একাউন্টের মধ্যে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে আরো অতিরিক্ত ৬.৪% ফী ধার্য করা হয়।
২০১১ সালের জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে ব্রাজিলীয় ব্যবহারকারীগণ ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পেপ্যাল থেকে টাকা তুলতে আর পারবেন না।
ভারত বর্ষ
ভারতীয় ব্যবহারকারীদের সাথে সমঝোতা চুক্তি ২০১১ সালের মার্চে পেপ্যাল পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এর নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য। [১][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]. এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলো হলঃ
রপ্তানী সংক্রান্ত পণ্য বা সেবার লেনদেন এর পরিমাণ ৫০০ ডলারের অতিরিক্ত হতে পারবে না।
কোন অর্থ গ্রহণের ৭ দিনের মধ্যে তা ব্যাঙ্ক একাউন্টে স্থানান্তরিত করতে হবে। গৃহীত অর্থ পুনরায় কোন পণ্য বা সেবা কেনার কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
পেপ্যাল গবেষণাগার
পেপ্যালের নতুন আবিষ্কারের স্থান, PayPal-Labs.com,[৪২] বেশকিছু নতুন প্রযুক্তি, পদ্ধতি, ও সেবার প্রদর্শনী হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন স্টোরফ্রন্ট এপ্লিকেশন,[৪৩]মাইস্পেস এবং ফেসবুক অনুদান উইজেট এবং পেপ্যাল ব্লগ।.[৪৪]
ব্যাঙ্ক অবস্থান
পিটার থিয়েল, পেপ্যালের প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন পেপ্যাল ব্যাঙ্ক নয় কারণ প্রচলিত আংশিক তহবিল ব্যাংকিং এ পেপ্যাল অংশগ্রহণ করে না।[৪৫] তার পরিবর্তে পেপ্যালের গচ্ছিত তহবিল বাণিজ্যিক সূদ উৎপাদনকারী চেকিং একাউন্টে রাখা হয়। [৪৬]
In the যুক্তরাষ্ট্রে, PayPal is licensed as a money transmitter on a state-by-state basis.[৪৭] যদিও প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাঙ্ক হিসেবে নিবন্ধিত নয় তবুও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত কিছু আইন পেপ্যালের ওপরেও বলবৎ হয়। যেমনঃ ভোক্তা নিরাপত্তা আইনের রেগুলেশন ই এবং ইউএসএ প্যাট্রিয়ট এক্ট।[৪৮]
২০০৭ সালের ২রা জুলাই পেপ্যাল (ইউরোপ) তাদের ইউরোপিয়ান কার্যক্রমের কেন্দ্র যুক্তরাজ্য থেকে লুক্সেমবুর্গএ স্থানান্তর করে। লুক্সেমবুর্গ এর প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি ব্যাঙ্ক হিসেবে পরিচালিত হয় এবং কমিশন ডি সার্ভাইলেন্স দু সেক্টিউর ফাইন্যান্সিয়ার (CSSF) কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয়। এরই মাধ্যমে সমগ্র ইউরোপীয় ইউনিয়নে পেপ্যাল তাদের সেবা প্রদান করে থাকে।
নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নীতিমালা
ক্রেতা নিরাপত্তা নীতিমালা অনুসারে একজন ক্রেতা কোন পণ্য ক্রয়ের ৪৫ দিনের ভেতরে অভিযোগ করতে পারবেন যদি সেই সময়ের ভেতরে পণ্য ক্রেতার কাছে না পৌঁছায় অথবা পণ্যের বিবরণের চেয়ে যথেষ্ট ভিন্ন রকমের হয়। যদি ক্রেতা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে থাকেন তবে ক্রেডিট কার্ড কোম্পানীর চার্জব্যাক এর মাধ্যমে অর্থ ফেরত পেতে পারেন।
একই ভাবে পেপ্যালের দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার বিক্রেতাদেরকেও বিক্রেতার নিরাপত্তা নীতিমালার মাধ্যমে সীমিত পরিমাণে সুরক্ষা দিয়ে থাকে। [৪৯] সাধারণভাবে, বিক্রেতা নিরাপত্তা নীতিমালার উদ্দেশ্য হল বিক্রেতাকে কয়েক প্রকার অভিযোগ ও চার্জব্যাকের বিপরীতে সুরক্ষা প্রদান করা যদি বিক্রেতা পণ্য পৌঁছানোর প্রমাণসহ কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে পারে। পেপ্যালের বক্তব্য অনুসারে বিক্রেতা নিরাপত্তা নীতিমালা "গঠন করা হয়েছে বিক্রেতাদের ক্রেতাদের অননুমোদিত অর্থপ্রেরণ ও পণ্য না পৌছানোর অভিযোগের বিপরীতে সুরক্ষা প্রদানের জন্য ". এই নীতিমালায় একটি তালিকা রয়েছে "বহির্ভূত" পণ্যের যার মধ্যে রয়েছে "অস্পর্শযোগ্য বস্তু", "পণ্যের বিবরণের সাথে পণ্যের অমিল" এবং "বার্ষিক অর্থফেরতের সীমা অতিক্রম" ইত্যাদি। নীতিমালার মধ্যে পণ্য বিক্রয়ের নিয়মের ভেতরেও আরো কড়াকড়ি রয়েছে, অর্থ প্রেরণের পদ্ধতি এবং পণ্য পৌছানোর দেশের ঠিকানাও বিবেচনার অন্তর্ভুক্ত। (শুধুমাত্র পণ্য ট্র্যাক করার পদ্ধতি থাকলেই তা বিক্রেতা নিরাপত্তা নীতিমালার সুবিধা পাবার জন্য যথেষ্ট নয়।) [৫০]
নিরাপত্তা
সুরক্ষা চাবি
২০০৬ সালের শুরুর দিকে পেপ্যাল একটি ঐচ্ছিক সুবিধা হিসেবে সুরক্ষা চাবি প্রচলন করে যা প্রতারণার বিরুদ্ধে আরেকটি সুরক্ষা হিসেবে কাজ করবে। একজন ব্যবহারকারী যার একাউন্টের সাথে সুরক্ষা চাবি সংযোগ করা আছে সাধারণ নিয়মে লগিন করতে শুরু করেন, কিন্তু তার লগিন আইডি এবং পাসওয়ার্ড প্রদানের পরে সুরক্ষা চাবি কর্তৃক সৃষ্ট ছয় ঘরবিশিষ্ট সংখ্যাটি অনুপ্রবেশ করাতে বলা হয়। লগিনে স্বাচ্ছন্দের জন্য ব্যবহারকারী তার পাসওয়ার্ডের শেষে ছয় অঙ্কের সংখ্যাটি যোগ করে নিতে পারেন। এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীকে আরেকটি পাতায় তথ্য দেয়ার প্রয়োজন হয়না লগইনের সময়। এই পদ্ধতিটি কিছু কিছু সেবার সাথে ব্যবহার করা প্রয়োজন হয়। যেমন ই-বেতে যখন কিছু কেনাকাটা করা হয় পেপ্যাল ব্যবহার করে আইফোনের মাধ্যমে।
এইরুপ দুই ধাপ প্রত্যায়ন এর উদ্দেশ্য হল তৃতীয় পক্ষের জন্য প্রতারণামূলক একাউন্ট ব্যবহার করা প্রকৃত নিরাপত্তা চাবি ছাড়া কঠিক করে তোলা। যদিও কথিত ম্যান ইন দি ব্রাউজার (MITB) আক্রমণের বিরুদ্ধে এই নিরাপত্তা যথেষ্ট নয়। উপরন্তু ব্যবহারকারী (অথবা সন্দেহভাজন তৃতীয় পক্ষ) একাউন্টের সাথে সংযুক্ত কার্ড অথবা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংখ্যা জোগান দেওয়ার মধ্যে বৈকল্পিকভাবে পরিচয় প্রমাণ করতে পারে। সুতরাং, পেপ্যালের বাস্তবায়ন প্রকৃত দুই ধাপ পরিচয় প্রমাণ প্রক্রিয়ার নিরাপত্তা দেয় না।
এই নিরাপত্তা চাবির মূল্য বর্তমানে ৫ ডলার পরবর্তীকালে কোন নিয়মিত ফী ছাড়াই। [৫১] অ্যাকাউন্টের সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চাবি ব্যবহার করার সূযোগ শুধুমাত্র অস্ট্রলিয়া, জার্মানি, কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই দেশগুলোর নিবন্ধিত ব্যবহারকারীদের দেয়া হয়.[৫২]
এমটিএএন
মোবাইল ফোনেরক্ষূদেবার্তা ব্যবহার করে এমটিএএন(মোবাইল ট্র্যানজ্যাকশন অথেন্টিকেশন নাম্বার) পাওয়া সম্ভব[৫৩] সমস্ত নিরাপত্তা পরিমাপের মত, অপেক্ষাকৃত পুরনো মডেলের ফোনে এই প্রক্রিয়ার দূর্বলতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। [৫৪]
নিয়ন্ত্রণ
ইউরোপে, পেপ্যাল লুক্সেমবার্গে একটি ব্যাঙ্ক হিসেবে নিবন্ধন করা হয় PayPal (Europe) Sàrl et Cie SCA আইনি নামের অধীনে, যেটি একটি প্রতিষ্ঠান লুক্সেমবার্গের ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বা কমিশন ডি সার্ভাইলেন্স দু সেক্টিউর ফাইন্যান্সিয়ার (CSSF) কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। [৫৫][টীকা ১][৫৬] এই পরিবর্তনের পূর্ব পর্যন্ত পেপ্যাল নিবন্ধিত ছিল যুক্তরাজ্যে PayPal (Europe) Ltd, নামে, একটি বাণিজ্যিক সত্বা যার আনুমোদন ছিল ইলেকট্রনিক মানি ইস্যুয়ার হিসেবে যুক্তরাজ্যের ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস অথরিটির (FSA) অধীনে ২০০৪ সাল থেকে। এই প্রক্রিয়া ২০০৭ সালে শেষ হয়ে যায় যখন প্রতিষ্ঠানটি লুক্সেমবার্গে স্থানান্তরিত হয়ে যায়।[৫৭][৫৮]
যদিও যুক্তরাষ্ট্রে পেপ্যালের ব্যাপক ব্যবহারকারীর সাথে সুগভীর চুক্তি থাকে,[৫৯] তথাপি আমেরিকার কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক পেপ্যাল সরাসরি নিয়ন্ত্রিত নয় এই কারণে যে তারা মুলত ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে কাজ করে।[৬০] পেপ্যালের অবস্থানের বিষয়ে আইন এখনো অস্পষ্ট যে এটি কি একটি ব্যাঙ্ক, নাকি সীমাবদ্ধ ব্যাঙ্ক, অর্থ প্রেরক সংস্থা নাকি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। পেপ্যাল স্থানীয় রাজ্যের আইন অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে যদিও রাজ্যের আইন একটির থেকে আরেকটি কমবেশি হয় ব্যাঙ্ক, সীমাবদ্ধ ব্যাঙ্ক, প্রেরক সংস্থা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সংজ্ঞাইত করতে। পেপ্যালের নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে নিকটবর্তী আইনগত ব্যাখ্যা পাওয়া যায় পারস্পরিক P2P লেনদেন ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে। আইনগতভাবে, একটি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন, বিশেষত কার্ডধারী ও কার্ড প্রদানকারী ব্যাঙ্কের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ন্ত্রিত হয় ট্রুথ ইন লেন্ডিং এক্ট (TILA) 15 U.S.C. §§ 1601-1667f যা Z, 12 C.F.R. pt. 226, (TILA/Z). আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। TILA/Z এই আইন বিল তৈরিতে প্রমাদ, বিবাদ মেটানো এবং অননুমোদিত লেনদেনের ক্ষেত্রে কার্ডধারীর দায়বদ্ধতা ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়। করে। [৬১] একই ভাবে ডেবিট কার্ডধারী ও তার ব্যাঙ্কের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ন্ত্রিত হয় ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার এক্ট (EFTA) 15 U.S.C. §§ 1693-1693r, এর E, 12 C.F.R. pr. 205, (EFTA/E) ধারা আনুসারে। EFTA/E ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ ও দৃড় ভুল সংশোধনের নীতি সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়। [৬২] However, because PayPal is a তথাপি যেহেতু পেপ্যাল একটি তাৎক্ষনিক পেমেন্ট পদ্ধতি এবং এছাড়া সরাসরি নিয়ন্ত্রিত নয়, তাই TILA/Z এবং EFTA/E আইনগুলো সরাসরি পেপ্যালের ওপরে পরিচালিত হয় না যখন একবার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যায়। সহজভাবে, যদি না পেপ্যালের একটি লেনদেন ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাহলে বিক্রেতা কর্তৃক প্রতারণা বা জালিয়াতির বিরুদ্ধে ক্রেতার করণীয় তেমন কিছু নেই। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
২০১০ সালের জানুয়ারীর ২৭ তারিখ পর্যন্ত ভারতে পেপ্যালের অন্তঃসীমান্ত অর্থ স্থানান্তরের অনুমতি ছিল না। নিউ ইয়র্ক টাইমস এর "India’s Central Bank Stops Some PayPal Services" শীর্ষক প্রবন্ধে, ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুখোপাত্র আলপনা কাল্লিওয়ালা জানান "অন্তঃসীমান্ত মূদ্রা লেনদেনের সেবার জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের Payment and Settlement Systems Act, আইনের অধীনে অনুমতি প্রয়োজন, পেপ্যালের সেই অনুমতি নেই।"[৬৩] পেপ্যাল "Certificates of Authorisation issued by the Reserve Bank of India under the Payment and Settlement Systems Act, 2007 for Setting up and Operating Payment System in India" এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত নয়। [৬৪]
টেমপ্লেট:বিশ্বব্যাপী
যদি একটি অননুমোদিত তৃতীয় পক্ষ কোনও একজনের পেপ্যাল লগিন তথ্য সংগ্রহ করে ও ব্যবহার করে এবং একান্টধারীর ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে একটি লেনদেন সম্পন্ন করে তাহলে EFTA/E এবং TILA/Z এই তথ্য চুরির জন্য পেপ্যালকে দায়িত্বশীল করে। অবশ্যই এই আইনের সুনির্দিষ্ট ব্যতিক্রম রয়েছে। এর মধ্যে একটি হল, যখন পেপ্যালের জমা একাউন্ট থেকে বেআইনি ভাবে অর্থ উত্তোলন করা হয়। এইরকম পরিস্থিতিতে পেপ্যাল অথবা ব্যাঙ্ক কেউই এই অর্থ ফেরত দেবার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে না কারণ পেপ্যাল ও গ্রাহকের মধ্যকার চুক্তি এইরকম লেনদেনের জন্য অনুমতি দেয় .[৯৫]
পেপ্যালের গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সীমিতভাবে সংরক্ষিত একটি কেন্দ্রীয় আইন দ্বারা। যেহেতু পেপ্যাল একটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান Gramm-Leach-Bliley Act (GLB), এই আইন আনুসারে, তাই তারা গ্রাহকের গোপনীয় তথ্য তৃতীয় কোন পক্ষের নিকট প্রকাশ করতে পারেনা যদি না সেটি প্রকাশ করার জন্য গ্রাহক অনুমতি দিয়ে থাকে। [৯৬]
যদি কোন গ্রাহকের একাউন্ট প্রতারণা বা বিনা অনুমতিতে অর্থ লেনদেনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়, তাহলে পেপ্যাল সেটির অবস্থান হিসেবে সীমিত প্রবেশাধিকার বা "Limited Access" পদবী দিয়ে চিহ্নিত করে। এই পরিস্থিতিতে একজন একান্টধারীকে অবশ্যই নিম্নের কাজগুলো করা লাগবে।
লগ ইন
পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা।
কয়েকটি নিরাপত্তামূলক প্রশ্নোত্তর তৈরি করা (তার ব্যক্তিগত পছন্দের বিপরীতে— যেমন "আপনার প্রিয় আইসক্রিম কোনটি?" এরকম নয় যে "আপনার মায়ের পূর্বের নাম কি ছিল?")
অবস্থান নিশ্চিত করা ফোনে অথবা ইমেইলে।
ফিশিং
পেপ্যালের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ফিশিং এর হাত থেকে বাঁচার জন্য উপদেশ দিয়ে থাকে[৯৭] যেন ব্যবহারকারীরা সহজে সন্দেহজনক কিছু দেখলে চিনতে পারে এবং কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারে। পেপ্যাল তার ব্যবহারকারীদের উৎসাহিত করে ফিশিং সম্পর্কিত ইমেইল যেন পেপ্যালের নিকটে পৌছে দেয়।
সমালোচনা এবং সীমাবদ্ধতা
এই নিবন্ধটির এই অংশে সমালোচনা বা বিতর্ক থাকতে পারে যা বিষয়টির নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণের সাথে আপস করতে পারে। অনুগ্রহ করে সম্পূর্ণ নিবন্ধে বিষয়বস্তুগুলিকে একীভূত করুন, অথবা এই অংশটি পুনরায় লিখুন।(May 2009)
বর্তমান (2011/04/15 09:17 CST) পেপ্যালের গ্রাহক চুক্তিনামা ৩৪ পৃষ্ঠা দীর্ঘ পিডিএফ নাথি। [৯৮]. যদি একটি পেপ্যাল ব্যবসায়ী থেকে যদি এক একটি পণ্য ক্রয় করা হয়, একজন ক্রেতা নিজের ও ব্যবসায়ীর পরেও সালিশির জন্য একটি অতিরিক্ত স্তরে সম্মত হচ্ছে। সুতরাং এমনকি যদি ব্যবসায়ী অসঙ্গতভাবে লেনদেন করে, পেপ্যাল তাদের নিজের নীতিমালা অমান্য করেনি যতক্ষন পর্যন্ত ব্যবহারকারী পেপ্যালের সঙ্গে একটি অতিরিক্ত সালিশ পদ্ধতির মধ্য দিয়ে পর্যন্ত গিয়েছে। একমাত্র যখন পেপ্যাল তাদের ৩৪ পাতা চুক্তিনামা অনুসারে কোন সমস্যার সুরাহা করতে ব্যর্থ হয় তখন একজন গ্রাহক সরাসরি ক্রেডিট কার্ড সরবরাহকারীর সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
সামথিং অফুল, নামে ওয়েবসাইটের সত্বাধিকারী রিচার্ড কায়ানকা ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হারিকেন কাটরিনার ভুক্তভোগীদের জন্যে একটি পেপ্যাল একাউন্ট খোলেন যার অর্থ রেড ক্রসে অনুদানের জন্য সংগ্রহ করা হয়। তার এই আহ্বানে দ্রুতহারে সেই একাউন্টে অনুদান আসতে থাকে যার ফলে সেই একাউন্টটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থগিত করে দেয়া হয়, পরবর্তীতে সেই একাউন্টকে নিয়মিত করার জন্য পেপ্যালের গ্রাহক সেবা বিভাগের সাথে যে পরিমাণে সময় এবং ঝামেলা পোহাতে হয় কায়ানকা তার যথেষ্ট সমালোচনা করেন। সামথিং অফুল ওয়েবসাইটের সদস্যগণ যখন তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেন পেপ্যাল কর্তৃক নিযুক্ত দাতব্য প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ওয়ের, বিষয়ে, কায়ানকা তখন সকল দাতাদের অর্থ ফেরত দিয়ে দেন যেন তারা নিজেদের পছন্দের দাতব্য প্রতিষ্ঠানে অর্থ প্রদান করতে পারেন। যদিও পেপ্যাল বহির্বিশ্বের দাতাদের এক্সচেঞ্জ ফী এবং কমিশন ফী ফেরত দেয়নি।[৯৯][১০০]
২০০৮ সালের মার্চ মাসে অস্ট্রেলিয়ার একটি বর্তমান সময়ের ওপরে টেলিভিশন প্রোগ্রাম টুডে টুনাইট পেপ্যালের ওপরে একটি পর্ব প্রচার করে যেখানে পেপ্যালের নিরাপত্তা, একাউন্ট যব্দকরণ ও গ্রাহক সেবার বিষয়ে সমালোচনা করা হয়। [১০১]
বেশকিছু পেপ্যালের সমালোচোনাকারী ওয়েবসাইট সৃষ্টি হয়েছে যাদের মুল অভিযোগ পেপ্যাল কর্তৃক একাউন্ট যব্দকরণ যখন ই-কমার্স সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের দ্রুত প্রবৃদ্ধি ঘটে, ফলে সেসকল ব্যবসায়ী তাদের সরবরাহকারীদের সময়মত অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হয়। [১০২] এমনই এক ওয়েবসাইট, Paypalsucks.com,[১০৩] ranked third on a ফোর্বস ম্যাগাজিন এর ২০০৫ সালের সেরা "Top Corporate Hate Web Sites" এর তালিকায় তৃতীয় হয় "বৈরিতা" এবং ওয়েব পোস্টিং এবং অন্যান্য বিষয়ে এর "বিনোদোন মাত্রার" ওপরে। [১০৪]
অস্ট্রেলিয়ান কম্পিটিশন এন্ড কনজিউমার কমিশন ২০০৮ সালের জুন মাসে উদ্ঘাটন করে যে, "প্রাপ্ত প্রমাণসমূহ থেকে পেপ্যাল অন্যান্য সকল প্রক্রিয়া থেকে নিরাপদ অথবা অন্য সকল পদ্ধতি থেকে বেশি সেবা পাওয়া যায়, এই ধারনার উপযুক্ত অবলম্বন পাওয়া যায়নি"[১০৫]
২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পেপ্যাল সকল "ব্যক্তিগত" লেনদেন বন্ধ করে দেয় অথবা ফেরত দিয়ে দেয়। যেসকল অর্থ ইতোমধ্যে হাতবদল হয়ে গিয়েছিল বা যেসকল লেনদেন সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল সেগুলোও ফেরত দেয়া হয়। ফলে অনেক বিক্রেতার একাউন্ট ওভার ড্রাফট হয়ে যায়। সমগ্র ভারতের প্রতিষ্ঠান, ঠিকাদার এবং সেবা প্রদানকারী সংস্থাসমূহ হটাৎ করে পেপ্যালের নিকট ঋণী হয়ে পড়ে যখন পূর্ব ঘোষণা ব্যতীত তাদের লেনদেনের অর্থ ফিরিয়ে নেয় যেই অর্থ তারা গ্রহণ করে পরে ব্যাঙ্ক থেকে উঠিয়েও নিয়েছিল। [১০৬]
আন্তর্জাতিক ব্যাপ্তি থাকা সত্বেও একাধিম মূদ্রাসম্পন্ন ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে পেপ্যালের ক্ষমতা সীমিত। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, একজন ব্যবহারকারীর একাধিক দেশে ব্যাঙ্ক একাউন্ট থাকা অসম্ভব, এছাড়া ব্যবহারকারীর ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড যেই দেশে সেই দেশ ছাড়া অন্য দেশে ডাক ঠিকানা রাখা।
২০১০ সালের মার্চ মাসে পেপ্যাল ক্রিপ্টোম নামে প্রতিষ্ঠানের অনুদান যব্দ করে, তার ফলে ৫৩০০ ডলারের পাঠানো অনুদান আটকে যায়। [১০৭] পেপ্যাল এই পদক্ষেপের কোন ব্যাখ্যা দিতে অস্বীকার করে, এই দাবীতে যে অনুদান যব্দের কারণ জানালে তা ক্রিপ্টোমের নিজের গোপনীয়তার নীতিমালা ভঙ্গ করবে। [১০৮] এক সপ্তাহ পরে পেপ্যাল তাদের আচরণের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, যা ক্রিপ্টোমের প্রতিষ্ঠাতা জন ইয়ং বর্জন করে পেপ্যালের আচরণকে "অপমানজনক ও অগ্রহণযোগ্য" বলে জানান। [১০৯]
২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পেপ্যাল মাইনক্র্যাফট গেমের নির্মাতা স্বাবলম্বী গেম ডেভেলাপার মার্কুস প্রেসনের একাউন্ট যব্দ করে ফেলে। সেই সময় সেই একাউন্টে প্রায় €600,000 ছিল। [১১০][১১১]
এছাড়াও ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পেপ্যাল ওপেন সোর্স রিভিশন কন্ট্রোল সফটওয়ার টরটয়েজএসভিএন এর একাউন্ট স্থগিত করে দেয়। তাদের প্রধান ডেভেলপার এই পরিস্থিতিকে তুলনা করে একটি গাড়ির ওয়ার্কশপের সাথে এইভাবে, "তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা আপনার সাথে আর ব্যবসা করবে না ... কিন্তু দোকানের মালিক জানায় যে তারা আপনার গাড়ি ছয় মাসের আগে ফেরত দিতে পারবে না তাদের নিজস্ব নীতিমালার কারণে।"[১১২]
ডিসেম্বর ২০১০তে, পেপ্যাল পেপ্যাল গ্রহণযোগ্য ব্যবহার নীতিমালার লঙ্ঘনের অভিযোগে একটি একাউন্ট যা উইকিলিকস এর জন্য অর্থ উত্তোলোনে ব্যবহৃত হত, স্থায়ীভাবে সীমিত করে দেয়। প্যারিসে এক সম্মেলনে পেপ্যালের উপ-সভাপতি এক প্রশ্নের জবাবে জানান, যে সেই একাউন্টটি আমেরিকান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাপে স্থগিত করা হয়েছে। .[১১৩] পরবর্তীতে পেপ্যাল এই বলে পুনরাবৃত্তি করে যে একাউন্টটি পেপ্যালের গ্রহণযোগ্য ব্যবহার নীতিমালার লঙ্ঘন করে। এর ফল হিসেবে পেপ্যালের ওয়েবসাইট paypal.com এ সাইবার আক্রমণ ঘটে এবং একটি ক্ষূদ্র সংখ্যক ব্যবহারকারী তাদের পেপ্যাল একাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেন এই ঘটনার প্রতিবাদ হিসেবে।
জনস্বার্থ মামলা
এই নিবন্ধটি মেয়াদোত্তীর্ণ। সাম্প্রতিক ঘটনা বা সদ্যলভ্য তথ্য প্রতিফলিত করার জন্য অনুগ্রহ করে এই নিবন্ধটি হালনাগাদ করুন।(July 2010)
২০০২ সালে CertCo পেপ্যালের বিরুদ্ধে মামলা করে এই অভিযোগে, যে পেপ্যাল তাদের ডিস্ট্রিবিউটেড কম্পিউটিং সিস্টেম ব্যবহার করে ক্ষূদ্র পেমেন্ট বিতরণের পদ্ধতির মেধাসত্ব লঙ্ঘন করেছে। ২০০২ সালের এপ্রিল মাসে CertCo তাদের এই মামলা প্রত্যাহার করে নেয় এই বলে, যে তারা মীমাংসায় পৌছিয়েছে যার ফলে "অনানুষঙ্গিক পেমেন্ট এবং পারস্পরিক সহায়তার সুযোগ থাকবে"।
২০০২ সালের মার্চ মাসে দুজন আলাদা ব্যক্তি পেপ্যালের বিরুদ্ধে Electronic Funds Transfer Act (EFTA) এবং ক্যালিফোর্নিয়ার আইন ভঙ্গের অভিযোগে মামলা করে। . বেশিরভাগ অভিযোগই ছিল পেপ্যালের বিবাদ মীমাংসার পদ্ধতির বিষয়ে। এই দুটি ভিন্ন মামলা একত্র করে পেপ্যালের বিরুদ্ধে ক্লাস একশন মামলা করা হয় (In re: PayPal litigation). একটি অনানুষ্ঠানিক সমঝোতায় আসা হয় ২০০৩ সালের নভেম্বর মাসে এবং পরে ২০০৪ সালের জুন মাসে আনুষ্ঠানিক সমঝোতায় আসা হয়। এই মীমাংসা অনুসারে পেপ্যালের ব্যবসা পদ্ধতি পরিবর্তন করার নির্দেশ আসে (EFTA- সংক্রান্ত অভিযোগের সুরহা পদ্ধতি সহ), একই সাথে ৯.২৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে বিতরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়। পেপ্যাল অন্যায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে।[১১৪]
২০০২ সালের মে মাসে, Tumbleweed Communications পেপ্যাল এবং পরবর্তীতে ই-বের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে এই অভিযোগে যে পেপ্যাল গ্রাহকদের ইমেইলে অর্থনৈতিক লেনদেনের খবর জানানোর সময় ব্যক্তিগতকরণ করে লিঙ্ক পাঠানোর সময় তাদের মেধাসত্বের অনধিকার চর্চা করছে। ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে দুই পক্ষ সমঝোতার চুক্তিতে আসে কিন্তু এই সমঝোতার অর্থনৈতিক বিবরণ জনসমাক্ষে প্রকাশ করেনি। [১১৫]
২০০৩ সালের জুন মাসে Stamps.com পেপ্যাল ও ই-বের বিরুদ্ধে মামলা করে চুক্তিভঙ্গের, সরল বিশ্বাস ও উপযুক্ত কারবার, চুক্তিপত্রে অনধিকার ইত্যাদি আরো অভিযোগে মামলা দায়ের করে। ২০০২ সালের লাইসেন্সের চুক্তিতে Stamps.com এবং পেপ্যাল চুক্তিবদ্ধ হয় যে পেপ্যাল Stamps.com এর প্রযুক্তি তার গ্রাহকদের কাছে সহজলভ্য করে তুলবে, যেন পেপ্যালের গ্রাহকরা অনলাইন থেকেই তাদের ডাকটিকেট পেপ্যালের একাউন্টের মাধ্যমে কিনতে পারে। Stamps.com অভিযোগ করে যে পেপ্যাল তাদের শর্ত মোতাবেক কাজ করেনি এবং অভিযোগ করে যে ই-বে, পেপ্যাল এবং Stamps.com এর চুক্তির মাঝে অনধিকার চর্চা করছে, তাই ই-বেকেও এই মামলায় জড়ানো হয়। [১১৬]
ক্রেইগ কম্ব এবং আরো দুইজন ব্যক্তি ২০০২ সালের অগাস্ট মাসে ক্লাস একশন মামলা করেন পেপ্যালের বিরুদ্ধে যা, Craig Comb, et al. v. PayPal, Inc. নামে পরিচিত। তাদের অভিযোগে ভোক্তাদের একাউন্টের বেআইনি যব্দ এবং ভয়াবহ গ্রাহক সেবার অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগসমূহের মধ্যে গ্রাহকের জমাকৃত অর্থ ১৮০ দিন পর্যন্ত স্থগিত রাখা যতদিন পর্যন্ত পেপ্যাল কর্তৃক কোন অভিযোগের সুরাহা না হয়, ফলে গ্রাহকদের বিবাদ মেটানোর জন্য ব্যায়বহুল American Arbitration Associationএর পদ্ধতি মোতাবেক মীমাংসার জন্য যাওয়া লাগে। আদালত এই মামলার ফলাফল ঘোষণার সময় জানায়, "পেপ্যালের গ্রাহক চুক্তি এবং এই বিবাদের মিমাংসার ক্লজসমূহ ক্যালিফোর্নিয়ার আইন অনুসারে অত্যন্ত বিবেকবর্জিত। " আরো মন্তব্য করা হয় তাদের চরম পক্ষপাতিত্ব এবং ক্লাস একশন মামলার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের ফলাফল হিসেবে "বিবেকের আতঙ্ক" হিসেবে পরিচিত এবং পেপ্যাল "চুক্তিগতভাবে নিজেদের যেকোনরকমের অভিযোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষিত রাখার প্রচেষ্টা করে।" এই মামলার ফলাফল পেপ্যালের বিরুদ্ধে চলে যায়। [১১৭]
২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পেপ্যাল ব্যাঙ্ক ওয়ান কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে মেধাসত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করে। পেপ্যাল দাবি করে যে ব্যাঙ্ক ওয়ানের অনলাইন বিল-প্রদানের ব্যবস্থা পেপ্যালের ১৯৯৮ সালে প্রাপ্ত অনলাইন বিল-প্রদানের ব্যবস্থার মেধাসত্ব লঙ্ঘন করে। ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাঙ্কের আইনজীবিদের নিকট পাঠানো সাবধানবাণী আমলে না আনলে পেপ্যাল মামলা দায়ের করে।[১১৮]
২০০৩ সালের নভেম্বর মাসে, AT&T ই-বে এবং পেপ্যালের বিরুদ্ধে মামলা করে এই দাবিতে, যে তাদের অর্থপ্রদানের পদ্ধতি AT&T র মেধাসত্ব লঙ্ঘন করে যা, তারা ১৯৯১ সালে আবেদন করে এবং ১৯৯৪ সালে প্রাপ্ত হয় [১১৯]
২০০৪ সালের মার্চ মাসে পেপ্যাল এবং নিউ ইয়র্ক রাজ্যের এটর্নী জেনারেল ইলিয়ট স্পিৎজার, এই সমঝোতায় আসেন যে, পেপ্যাল তার ভোক্তাদের দায়িত্ব ও অধিকার আরো নিখুঁতভাবে প্রকাশ করবে এবং নিউ ইয়র্ক রাজ্য সরকারকে দেড় লক্ষ ডলার প্রদান করবে জরিমানা ও এই মামলার খরচ বহন করার জন্য। [১২০]
২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে দুটি এন্টি ট্রাস্ট মামলা করা হয় ই-বে/পেপ্যালের বিরুদ্ধে মাইকেল ম্যালোন কর্তৃক।[১২১] মামলায় অভিযোগ করা হয়, যে ই-বে এবং পেপ্যালের সম্পর্ক একচেটিয়া বাজারের সৃষ্টি করে যা আমেরিকার এন্টি ট্রাস্ট আইনের পরিপন্থী।
আরও দেখুন
বৈদ্যুতিক অর্থ
হাতবদল ফী
অনলাইন পেমেন্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান (পেপ্যালের প্রতিযোগী)
↑Kane, Margaret (জুলাই ৮, ২০০২)। "eBay picks up PayPal for $1.5 billion"। CNET News.com। CNET Networks। জুলাই ১৪, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১১-১৩।
↑Virgil Larson, "Local building, global growth: PayPal opens facility, plans to expand staff to keep up with business," Omaha World-Herald, March 8, 2007, 1D.
↑Uniting and Strengthening America by Providing Appropriate Tools Required to Intercept and Obstruct Terrorism (USA Patriot Act) Act of 2001, Pub. L. No. 107-56, 115 Stat. 272 (2001)
↑User Agreement for PayPal Service (it reads in part: "Credit card chargeback rights, if they apply, are broader than PayPal Buyer Protection")
↑Margaret Jane Radin et al., Internet Commerce The Emerging Legal Framework 1174-1175 Foundation Press (2d ed. 2006)
↑Margaret Jane Radin et al., Internet Commerce The Emerging Legal Framework 1176 Foundation Press (2d ed. 2006)
↑NYtimes.com The New York Times, India’s Central Bank Stops Some PayPal Services, by Heather Timmons and Claire Cain Miller, February 10, 2010
↑RBI.org.inওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে Certificates of Authorisation issued by the Reserve Bank of India under the Payment and Settlement Systems Act, 2007 for Setting up and Operating Payment System in India