পেত্রা বিশ্ববিদ্যালয় হল জর্ডানের আম্মানে অবস্থিত একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এর বর্তমান সভাপতি মারওয়ান মুওয়াল্লা।[১]
ইতিহাস ও প্রতিষ্ঠান
আম্মানে অবস্থিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি আম্মানের উপশহরে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।[২] উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বীকৃত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি মধ্যম আকারের নারী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে চালু হয়েছিল।[৩][৪] জর্ডানে এবং আরব বিশ্বেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম এ বিশ্ববিদ্যালয়টি জর্ডান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (জে.ইউ.ডব্লিউ.) নামে যাত্রা শুরু করে। প্রথম বছর মোট ২৬৫ জন নারী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি অনুষদের আওতাভুক্ত ১৬টি বিষয়ে ভর্তি হন।
১৯৯৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ নারী-পুরুষদের মধ্যে জ্ঞানার্জনে বৈষম্য দূর করতে সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু করে। তখন এর নাম পরিবর্তন করে ইউনিভার্সিটি অব পেত্রা রাখা হয়।
২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্নাতকোত্তর কর্মসূচী চালু করে। প্রথম বছরে ইংরেজি ভাষা এবং ফার্মেসী বিভাগে স্নাতকোত্তর কর্মসূচী চালু হলেও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে তা ৬টি বিভাগে উন্নীত হয়েছে।[৩]
পেত্রা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর শিক্ষায় অবদানের জন্য ব্যবস্থাপনায় আইএসও ৯০০১ সনদ এবং উচ্চতর শিক্ষামান বজায় রাখায় এক্রিডিটেশন কমিশন কর্তৃক সনদ লাভ করে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের কিউএস র্যাঙ্কিং-এও বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রথম স্থান লাভ করে।[৫]
অনুষদ
বিশ্ববিদ্যালয়টি এর সাতটি কলেজের মাধ্যমে বহুবিধ বিষয়ে পড়ার সুযোগ করে দেয়। কলা সম্পর্কিত বিষয় আরবিতে পড়ানো হলেও অন্যান্য বেশিরভাগ বিষয়ই পড়ানো হয় ইংরেজিতে। নতুন শিক্ষার্থীদের পড়ানোর জন্য ইংরেজি ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় এবং তার উপর ভিত্তি করেই কোর্স দেওয়া হয়। বিদ্যমান ৭টি অনুষদ[৩] হলঃ
- তথ্যপ্রযুক্তি
- স্থাপত্য ও নকশা
- প্রশাসনিক এবং অর্থায়ন বিজ্ঞান
- কলা ও বিজ্ঞান
- আইন
- ফার্মেসি ও চিকিৎসা বিজ্ঞান
- গণশিক্ষা
প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকর্তা
বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৩০০ জন কর্মকর্তা আছেন, যাদের বেশির ভাগই জর্ডানের নাগরিক। এছাড়াও আরব দেশসমূহ যেমন সিরিয়া ও ইরাক থেকেও অনেক প্রভাষক নিযুক্ত আছেন।
শিক্ষার্থী জীবন
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন ও সংস্কৃতির সাথে ডিনশীপ অব স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্স (ডিএসএ) ও প্রাতিষ্ঠানিক পরামর্শকদের দ্বারা অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। প্রতি প্রাতিষ্ঠানিক বছরের শুরুতেই নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য ডিএসএ নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ অনুষ্ঠানে সিনিয়রেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে তাদেরকে স্বাগতম জানায়। পেত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুনের সাথে এভাবে তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। অল্প সম্মানির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় তাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করত। সকল শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্যবীমার ব্যবস্থাও করে থাকে।
পেত্রা বিশ্ববিদ্যালয় ৩১টি বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ১০০০ জন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর আবাসস্থল। বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক অফিস সুবিধা দেবার ব্যবস্থা করা হয়।
২০০২-০৩ সাল থেকে ২০০৫-০৬ সাল পর্যন্ত উত্তীর্ণদের সংখ্যা ছিল নিম্নরূপঃ
- ২০০২-০৩: ৪৩৬
- ২০০৩-০৪: ৬৩২
- ২০০৪-০৫: ৬৫৭
- ২০০৫-০৬: ৭৭২
গবেষণা
ডিনশীপ অব গ্রাজ্যুয়েট স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ হল বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণার প্রাণকেন্দ্র। এটি দুটি সভা নিয়ে গঠিন; একটি গবেষণামূলক কর্মসূচীর জন্য, অপরটি স্নাতক পর্যায়ের জন্য। গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বাজেটের ৫% উচ্চতর শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা মন্ত্রণালয় কর্তৃক বরাদ্দ দেয়া হয়। পাঠ্যবই প্রকাশের জন্য এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকর্তাদের যাতায়াত খরচও ডিনশীপ দিয়ে থাকে।[১]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
টেমপ্লেট:জর্ডানের বিশ্ববিদ্যালয়