পরিবেশ নীতিশাস্ত্র (Environmental ethics) হচ্ছে পরিবেশ দর্শনের একটি অংশ যা নীতিশাস্ত্রের গতানুগতিক মানবভিত্তিক সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে অ-মানব জগৎ নিয়ে আলোচনা করে। পরিবেশ আইন, পরিবেশ সমাজতত্ত্ব, পরিবেশ ধর্মতত্ত্ব, পরিবেশ অর্থনীতি, বাস্তুসংস্থান এবং পরিবেশ ভূগোল সহ বিস্তৃত পরিসরের বিষয়ের উপর পরিবেশ নীতিশাস্ত্রের প্রয়োগ আছে। পরিবেশের উপর ভিত্তি করে মানুষকে গ্রহণ করতে হয় এরকম অনেক নৈতিক সিদ্ধান্ত রয়েছে, যেমন:
মানুষের কি মানুষের ব্যবহারের জন্য বনাঞ্চল পরিষ্কার করা চালিয়ে যাওয়া উচিত?
কেন মানুষকে তার প্রজাতির বিস্তার অব্যাহত রাখা উচিত?[১]
মানুষের কী গ্যাসোলিন-চালিত যানবাহন প্রস্তুত করা চালিয়ে যাওয়া উচিত?
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মানুষের কী কী পরিবেশগত বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করা উচিত?[২][৩]
মানুষের কি জেনেশুনে মানবতার উপকারের জন্য প্রজাতির বিলুপ্তির কারণ হওয়া চালিয়ে যাওয়া উচিত?
জীবনের রক্ষা ও প্রসারণের জন্য কীভাবে মানুষের পরিবেশের স্থানের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং সংরক্ষণ করা উচিত?[৪]
ইতিহাস
পরিবেশ নীতিশাস্ত্রের একাডেমিক ক্ষেত্রটি তৈরি হয় র্যাচেল কারসনের মত বিজ্ঞানীদের কাজের জবাবে এবং ১৯৭০ সালের ধরিত্রী দিবসের মত ঘটনার মাধ্যমে, যখন পরিবেশবাদীরা দার্শনিকদের সাথে পরিবেশগত সমস্যা নিয়ে দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করার বিষয়ে মত বিনিময় করেন। সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হওয়া দুটো গবেষণাপত্র এখানে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একটি হল লিন হোয়াইটের দ্য হিস্টোরিকাল রুট অব আওয়ার ইকোলজিক ক্রাইসিস (মার্চ ১৯৬৭)[৫] এবং গ্যারেট হারডিনের দ্য ট্র্যাজেডি অব দ্য কমনস (ডিসেম্বর ১৯৬৮)।[৬] এগুলো ছাড়াও গ্যারেট হার্ডিনের এক্স্প্লোরিং নিউ ইথিক্স অব সারভাইভাল নামক রচনা এবং এল্ডো লিওপোল্ড এর এ স্যান্ড কাউন্টি আলমানাক যাকে দ্য ল্যান্ড ইথিক্স বলা হয়, এগুলোও যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। লিওপোল্ড তার দ্য ল্যান্ড ইথিক্স-এ প্রকাশ্যে দাবী করেনযে পরিবেশগত সমস্যার মূল কারণটি দার্শনিক (১৯৪৯)।[৭] এক্ষেত্রে প্রথম আন্তর্জাতিক একাডেমিক জার্নালগুলো উত্তর আমেরিকার ১৯৭০ এর দশকের শেষ ও ১৯৮০ এর দশকের শুরুতে তৈরি হয়। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জার্নাল এনভায়রনমেন্টাল ইথিক্স ১৯৭৯ সালে এবং কানাডা ভিত্তিক জার্নাল দ্য ট্রাম্পেটার: জার্নাল অব ইকোসোফি ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত হওয়া শুরু হয়। এই বিষয়ে প্রথম ব্রিটিশ জার্নাল এনভায়রনমেন্টাল ভেল্যুস ১৯৯২ সালে প্রকাশিত হওয়া শুরু হয়।