নীনা হামিদ

নীনা হামিদ
উপনামগানের কোকিল
জন্মঢাকা
ধরনলোক সঙ্গীত
পেশাসঙ্গীতশিল্পী
বাদ্যযন্ত্রভোকাল
লেবেলএইচএমভি কোম্পানি

নীনা হামিদ(২৬ ডিসেম্বর ১৯৪৯) হলেন একজন বাংলাদেশী লোক সঙ্গীতশিল্পী। তিনি তার "আমার সোনার ময়না পাখি" এবং "যে জন প্রেমের ভাব জানে না" গানের জন্য প্রসিদ্ধ। লোকসঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৯৪ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে।

প্রারম্ভিক জীবন

নীনা হামিদ এক মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবু মোহাম্মদ আবদুল্লাহ খান ছিলেন একজন পুলিশ অফিসার এবং মাতা সফরুন নেছা। ভাইবোনের মধ্যে নীনা সবার ছোট। তার বড় ভাই মোজাম্মেল হোসেন, এবং বড় দুই বোন রাহিজা খানম ঝুনু ও রাশিদা চৌধুরী রুনু। নীনাদের পৈতৃক বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার নওদা গ্রামে। কিন্তু সেখানে তাদের যাতায়াত ছিল না। তার বাবা পুলিশ অফিসার হলেও সংস্কৃতিমনা ছিলেন এবং চেয়েছিলেন ছেলেমেয়েরা সংস্কৃতি চর্চা করুক।[]

নীনার সঙ্গীতে হাতেখড়ি হয় নিখিল দেবের কাছে। তখন প্রতিবছর তার স্কুলে প্রধান শিক্ষিক বাসন্তী গুহ গানের প্রতিযোগিতায় তার নাম লেখাতেন এবং তার নাম দেন "কোকিল"। তার বড় বোন আফসারী খানম সুরকার আবদুল আহাদের কাছে গানের তালিম নিতেন। আহাদ একদিন নীনার কণ্ঠ শুনে মুগ্ধ হন এবং তাকে উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের তালিম দেন।[] পরে ১৯৫৬ সালে নীনা ধ্রুপদী সঙ্গীতে তালিম নিতে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ভর্তি হন। একই সাথে তার বড় ভাই মোজাম্মেল হোসেন সেতার, বড় বোন ঝুনু নৃত্য এবং রুনু রবীন্দ্র সঙ্গীত বিভাগে ভর্তি হন। সেখানে নীনা গান শিখেন ওস্তাদ বারীণ মজুমদার ও বিমল দাসের কাছে।[]

সঙ্গীত জীবন

তিনি আবদুল আহাদের মাধ্যমে নিয়মিত বেতারে খেলাঘরের অনুষ্ঠানে ধ্রুপদী গান গাইতেন। স্কুল ব্রডকাস্টিং প্রোগ্রামে তিনি গান গেয়েছেন নীলুফার ইয়াসমীন, ওমর ফারুক ও হোসনা ইয়াসমীন বানুর সাথে। একদিন মানিকগঞ্জের গীতিকার ও সুরকার ওসমান খান তাদের বাড়িতে আসেন তার মেঝো বোন রুনুকে দিয়ে এইচএমভি কোম্পানির একটা গান করানোর জন্য। রুনু রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতেন। তিনি তার প্রস্তাবে না করলে নীনা এই সুযোগটা গ্রহণ করেন এবং ঐ গানটি গাওয়ার আবদার করেন। ওসমান খান রাজি হলেন এবং তাকে দিয়ে সেই গানের রেকর্ডিং করালেন। সেই গানের দোতারায় ছিলেন কানাইলাল শীল, বাঁশিতে ধীর আলী মিয়া, তবলায় বজলুল করিম, একতারায় যাদব আলী। "কোকিল আর ডাকিস না" শিরোনামের রেকর্ডটি বের হলে গানটির প্রচুর কাটতি হয়।[] এর পর রেকর্ড করা হয় "রূপবান পালা"। এই পালার সুরকার ছিলেন খান আতাউর রহমান। এই পালার "ও দাইমা কিসের বাদ্য বাজে গো", "শোন তাজেল গো", "সাগর কূলের নাইয়া" গানগুলো জনপ্রিয় হল। সেখান থেকে নির্মাণ করা হয় রূপবান (১৯৬৪) চলচ্চিত্র। ছবিটি ব্যাপক সারা ফেলে। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গানগুলোর হল - "আমার সোনার ময়না পাখি", "ওহ কি গাড়িয়াল ভাই", "আগে জানিনারে দয়াল", "আইলাম আর গেলাম", "আমার বন্ধু বিনোদিয়া", "আমার গলার হার", "আমায় কি যাদু করলি রে", "এমন সুখ বসন্ত কালে", "যারে যা চিঠি লিইখা দিলাম", "যোগী ভিক্ষা লয় না", "ওরে ও কুটুম পাখি", "উজান গাঙের নাইয়া"[]'আমার মন পাগল হইল রে"' "উইড়া যাও রে ময়না পাখি" "সখি জানলে""তোর পিড়িতে ঘুন ধরাইল".

ব্যক্তিগত জীবন

নীনা এমএ হামিদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। হামিদ একজন আধুনিক গানের শিল্পী।[] লোক ও আধুনিক ধারার নৃত্যশিল্পী ফারহানা চৌধুরী নীনা হামিদের ভাগনি।[]

সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. বিউটি, রওশন আরা (১৩ জুন ২০১৩)। "পল্লীগীতি সম্রাজ্ঞী নীনা হামিদ"দৈনিক আজাদী। ২০১৬-১২-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  2. "আমাদের সোনার ময়না পাখি"দৈনিক প্রথম আলো। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০। ২০১৭-০৭-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  3. "Nina and MA Hamid on Maasranga Television tonight"দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। মার্চ ১, ২০১২। ডিসেম্বর ৮, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 
  4. Kavita Charanji (ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০০৬)। "Farhana Chowdhury: Folk and modern dance are her forte"দ্য ডেইলি স্টার। ডিসেম্বর ১০, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭ 

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!