ধোপা

ধোপা নিজ বাড়ীতে কাপড় ইস্ত্রি করছে, কলকাতা ২০১৮

ধোপা ইংরেজি Fuller বা Washarman। কাপড় ধোয়া বা ইস্ত্রি করার কাজে নিয়োজিত বিশেষ শ্রেনী পেশার মানুষ। প্রাচীন হিন্দু সমাজে রজক নামের এক শ্রেনীর নিম্ন বর্ণের হিন্দু এই পেশায় নিয়োজিত ছিল। সেই সময় সাধারনত উচ্চ বর্ণ বা ধনাঢ্য পরিবারের সদস্যদের পরিধেয় বস্ত্র পরিষ্কার করে তারা জীবিকা নির্বাহ করতেন। ক্রমে সমাজের অন্যান্য বিত্তের মানুষেরা ধোপার সেবা গ্রহণ করতে শুরু করে। অধিকাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী ধোপারা বৈষ্ণব মতাদর্শে বিশ্বাসী।

সাধারনত: সাবান, সোডা, ব্লিচিং পাউডার ইত্যাদি রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে গরম পানিতে কাপড় সিদ্ধ করে পরিষ্কার করা হয়। পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নেয়ার আগে প্রয়োজনে একটি সিমেন্ট দ্বারা বাধান স্থান অথবা কাঠের উপরে কাপড় আছড়ান হয়। সূতী ইত্যাদি কাপড়ে প্রয়োজনে ভাতের মার বা স্টার্চ ব্যবহার করা হয়। সব শেষে ক্রেতার চাহিদা মতো ধোয়া কাপড় ইস্ত্রিও করা হয়। [] কাপড়েরর সাদা ও উজ্জ্বল রং নিশ্চিত করার জন্য নীল ব্যবহার করা হয়।

একসময়ে ধোপারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাপড় সংগ্রহ করত। ধোয়া ও শুকানোর পর সেই কাপড়গুলো আবার পৌছে দিত। আধুনিক সমাজে পাড়া মহল্লায় ধোপার দোকান বা লন্ড্রি শপ গড়ে উঠেছে যেখানে ক্রেতা নিজেই তাদের কাপড় পৌছে দেন এবং সংগ্রহ করেন।

ইতিহাস

ঢাকায় পর্তুগিজরা প্রথম কাপড় ইস্ত্রির ধারনাটি প্রচলন করে। ‘ইস্ত্রি’ শব্দটির উৎসও পর্তুগিজ ভাষা। ধারণা করা হয় যে গাউছিয়া মার্কেটের নিচ তলায় লিফা চাইনিজ ড্রাই ক্লিনার্স নামের দোকানটি ঢাকার সবচেয়ে প্রাচীন ধোপার দোকান। একসময়ে মুসলমানদের এই পেশায় বড় একটা দেখা যেত না। ১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান বিভাজনের সময়ে অনেক হিন্দু ধোপা পূর্ব বাংলা ছেড়ে চলে গেলে মুসলমানরা এই পেশায় ধীরে ধীরে প্রবেশ করে। একসময়ে বকল্যাণ্ড ব্রীজে বুড়িগঙ্গার ধারে সারিবদ্ধভাবে ধোপাদের কাপড় ধোয়ারদৃশ্য চোখে পড়ত। সেই সময়ে ঢাকার কর্পোরেশনে আইন করা হয়েছিল যেন ধোপা‌দের জন্য পৃথক ঘাটের ব্যবস্থা করা হয় এবং তাদের পেশার লাইসেন্স প্রদান করা হয়।[]

তথ্যসূত্র

  1. [১]/বাংলাপিডিয়া]
  2. [২][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]/বনিকবার্তা ২৪ সেপ্টেম্বের ২০১৪

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!