সাধারণত আলংকারিক বৃক্ষ হিসেবে রাস্তার ধারে সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো হয়। এর ফুলের রঙ বেগুনী বা নীল রঙের হয়ে থাকে। বসন্তে কোনো পাতা থাকে না। ফলে গোটা বৃক্ষটিকে মনে হয় বেগুনী বা নীল বৃক্ষের মত, বেশ স্বাপ্নিক একটা আমেজ নিয়ে আসে পরিবেশটাতে। এদের সৌন্দর্যের জন্য স্থান করে নিয়েছে বিভিন্ন কৃষ্টিতে ও তাদের কথা ও সাহিত্যে, গানে বাজনায়। এমনকি কুসংস্কারেও। অস্ট্রেলিয়াবাসী এখন চিন্তাই করতে পারে না জ্যাকারান্ডা বৃক্ষ ছাড়া জীবন। 'গ্রাফটন'কে (Grafton) অস্ট্রেলিয়ার জ্যাকারান্ডা রাজধানী বলা হয়, কেননা, গ্রাফটনের বেশির ভাগ রাস্তার পাশে সারিবদ্ধ ভাবে অসংখ্য জ্যাকারান্ডা লাগানো আছে। সেপ্টেম্বর-অক্টবর মাসে পুরো গ্রাফটনের রাস্তাগুলো জ্যাকারান্ডা ফুলে ফুলে বেগুনী হয়ে থাকে। এ উপলক্ষে প্রতি বছর এখানে উৎসব (Jacaranda festival) অনুষ্ঠিত হয়। [২] অস্ট্রেলিয়ার অনেক রাস্তার নাম জ্যাকারান্ডার নামে নামকরণ করা হয়েছে। যেমন, নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের গ্রাফটনে এবং লিসমোরে দুটি পৃথক রাস্তার নাম জ্যাকারান্ডা এভিনিউ নামে নামকরণ করা হয়েছে [৩]।
জ্যাকারান্ডা মাঝারি আকারের গাছ। আট থেকে দশ মিটারের মতো উঁচু হয়। ফুল নীল-বেগুনি। অতিরিক্ত পানি সহ্য করতে পারে না। চিরল চিরল পাতা। শীতে পাতা ঝরে যায়। বসন্তে ফুল ফুটে। কলি অবস্থায় গাঢ় রং। ফুল ফোটার পর একটু ফিকে রং ধারণ করে। গ্রীষ্ম-বর্ষায় সবুজ পাতায় ভরে ওঠে গাছ। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফোটে ফুল। গাছে ফুল থাকে অনেক দিন। ফুল গন্ধহীন। গোলাকার ফল পাঁচ সেন্টিমিটার চওড়া। ফল সবুজ রঙের। পাকা ফল বাদামি। জ্যাকারান্ডার বংশবৃদ্ধি বীজ ও কলম—দুভাবেই হয়। ঢাকার হাতিরঝিল, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও কার্জন হল প্রাঙ্গণে জ্যাকারান্ডাগাছ আছে।[৪]
↑A.H. Gentry & W. Morawetz, Jacaranda, in Gentry, A. H. 1992. Flora Neotropica: Bignoniaceae - Part II ( tribe Tecomeae). Flora Neotropica Monograph 25 (2): 1-130.