জরাসন্ধ (সংস্কৃত: जरासन्ध) ছিলেন মগধের রাজা। হিন্দু মহাকাব্য মহাভারত অনুযায়ী তিনি ছিলেন বৃহদ্রথ রাজবংশধর। তার পিতা বৃহদ্রথ এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। জরাসন্ধ একজন মহাবীর ও মহারথী হিসেবে মহাভারতে চিহ্নিত হয়েছেন। তার সাথে যাদবদের শত্রুতা ছিলো। তিনি বহু রাজাকে নিজের কারাগারে আটক করে রেখেছিলেন যাদের তিনি বলি চড়ানোর পরিকল্পনাও করেছিলেন। তার প্রবল পরাক্রমের জন্য আর্যাবর্তের বহু রাজা তার প্রতি ভীত ছিল।
জরাসন্ধের নামকরণ
জরাসন্ধ শব্দটি দুইটি সংস্কৃত শব্দের সন্ধিতে গঠিত। শব্দ দুইটি হলো জরা ও সন্ধ। সন্ধ অর্থ হলো যুক্ত করা। জরা নামক এক রাক্ষসী জরাসন্ধের দুইটি অর্ধাংশ জুড়ে পুর্ণ মানবাকৃতি দিয়েছিলো। তাই তার নাম জরাসন্ধ।[১][ভাল উৎস প্রয়োজন]
জন্ম রহস্য
জরাসন্ধের পিতা রাজা বৃহদ্রথের বিয়ে হয়েছিল কাশীর রাজার যমজ দুই কন্যার সাথে। রাজা তার দুই স্ত্রীকেই সমান ভালোবাসতেন, কিন্তু কারো কোন সন্তান ছিলো না। ঋষি চন্দকৌশিক একবার তার কাছে এলো এবং একটি একটি মন্ত্র পড়া আম তাকে দিয়েছিলো বর হিসেবে, যে আম তার স্ত্রীদের খাওয়ালে তারা সন্তান জন্ম দিতে পারবে। বৃহদ্রথ আমটি দুই ভাগ করে দুই স্ত্রীকে খাওয়ালেন। এর ফলে দুই স্ত্রী অর্ধেক বাচ্চার জন্ম দিলো। রাজা রেগে গিয়ে অর্ধাংশ দুইটি বনে ফেলে দিতে নির্দেশ দিলেন। সেই বনে জরা নামক এক রাক্ষসী বসবাস করতো। সে দুইটি অর্ধাংশ দেখতে পেল এবং অর্ধাংশ দুইটি যুক্ত করে একটি পূর্ণ বাচ্চা বানালো। জরা বাচ্চাটিকে রাজার কাছে নিয়ে গেলো এবং ফেরত দিয়ে দিলো। জরা বাচ্চাটির দুইটি অংশ জুড়ে দিয়েছিলো, তাই বাচ্চাটির নাম রাখা হলো জরাসন্ধ।[২]
চন্দকৌশিক ভবিষ্যতবানী করলেন যে, এই বাচ্চা বড় হয়ে মহান যোদ্ধা হবে এবং সে শিবের একজন ভক্ত হবে।[৩]
কর্ণের সাথে যুদ্ধ
কলিঙ্গের রাজকুমারী ভানুমতি এবং ময়ূরীকে দুর্যোধন বিয়ে করেছিলো। সে তার স্বয়ম্বর থেকে ভানুমতি এবং ময়ূরীকে উঠিয়ে নিয়ে আসে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই বাধা দিলে কর্ণ তাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং সবাই পরাজিত হয়। জরাসন্ধ কর্ণকে একক যুদ্ধে আহবান করে এবং পরাজিত হয়। সে প্রাণভিক্ষা চাইলে কর্ণ তাকে মাফ করে দেয়। দুর্যোধনও ত্রিলোকাপুরের রাজকুমারী ময়ূরীকে বিয়ে করেছিলেন।
জরাসন্ধ দ্রৌপদীর স্বয়ম্বরে উপস্থিত হয়, কিন্তু প্রতিযোগীতায় হেরে যায়।[৪]
ভীমের সাথে যুদ্ধ
কৃষ্ণের পরামর্শে ভীম জরাসন্ধের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। যুদ্ধে জরাসন্ধ হেরে যায়। ভীম তাকে হত্যা করে।
↑Squarcini, Frederico (২০১১)। Boundaries, Dynamics, and Constructions of Traditions in South Asia। 244 Madison Ave, #116, New York,NY: Anthem Press। পৃষ্ঠা 117। আইএসবিএন9780857284303।
তথ্যসূত্র
Purana Perennis: Reciprocity and Transformation in Hindu and Jaina Texts
গিবস,লরা. Ph. D. Jarasandha আধুনিক ভাষা MLLL-4993. ভারতীয় মহাকাব্য.
Dowson জন (1820-1881). একটি শাস্ত্রীয় অভিধান হিন্দু পুরাণ ও ধর্ম, ভূগোল, ইতিহাস এবং সাহিত্য. লন্ডন: Trübner, 1879 [পুনর্মুদ্রণ, লন্ডন: Routledge, 1979]. আইএসবিএন০-৪১৫-২৪৫২১-৪
মূল মহাভারতের শ্রী বেদ শ্লোক,
গীতা প্রেস,গোরখপুর সংস্করণ Mahābhārata
Ramanand সাগরের রামায়ণ Sagar এর "শ্রী কৃষ্ণ" সিরিয়াল