জনাথন প্রাইসসিবিই (ইংরেজি: Jonathan Pryce; জন্ম: ১ জুন ১৯৪৭) হলেন একজন ওয়েলসীয় অভিনেতা ও গায়ক। তিনি তার ভিন্নধর্মী কাজের জন্য সমাদৃত।[১] মঞ্চে তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি দুটি টনি পুরস্কার, দুটি লরন্স অলিভিয়ে পুরস্কার ও একটি ড্রামা ডেস্ক পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া ক্যারিংটন চলচ্চিত্রে তার কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার লাভ করেন।
রয়্যাল অ্যাকাডেমি অভ ড্রামাটিক আর্টে পড়াশুনা করার সময়ে তার দীর্ঘ সময়ের বান্ধবী ও পরে স্ত্রী ইংরেজ অভিনেত্রী কেট ফ্যাহির সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। ১৯৭০-এর দশকে তিনি মঞ্চে কাজ শুরু করেন। রয়্যাল কোর্ট থিয়েটারে হ্যামলেট মঞ্চনাটকে নাম ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে টনি পুরস্কার অর্জন করেন। এই অর্জনের পর তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে পার্শ্ব ভূমিকায় অভিনয় করেন। তার একটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ভূমিকা ছিল টেরি গিলিয়াম পরিচালিত ১৯৮৫ সালের কাল্ট চলচ্চিত্র ব্রাজিল।
তিনি ১৯৭৭ সালে তার ব্রডওয়ে অভিষেক কমেডিয়ান্স নাটকে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ চরিত্রাভিনেতা বিভাগে তার প্রথম টনি পুরস্কার এবং ১৯৯১ সালে মিস সাইগন নাটকে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ মুখ্য অভিনেতা বিভাগে তার দ্বিতীয় টনি পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৫ সালে তিনি এইচবিওর ধারাবাহিক গেম অব থ্রোনস-এ অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন এবং ২০১৬ সালে তাকে এই ধারাবাহিকের মূল অভিনয়শিল্পী হিসেবে দেখা যায়। ২০১৭ সালের শুরু থেকে তিনি ট্যাবু ধারাবাহিকে স্যার স্টুয়ার্ট স্ট্রেঞ্জ চরিত্রে অভিনয় করছেন। ২০১৯ সালে তিনি দ্য টু পোপস চলচ্চিত্রে পোপ ফ্রান্সিস চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে তার প্রথম একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[২]
প্রারম্ভিক জীবন
জন প্রাইস ১৯৪৭ সালের ১লা জুন ফ্লিন্টশায়ারের কারমেলে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আইজাক প্রাইস ছিলেন একজন খনি শ্রমিক এবং তার মাতা মার্গারেট এলেন (বিবাহপূর্ব উইলিয়ামস)। তারা দুজনে একটি মুদি দোকান চালাতেন। জনাথনের দুই বড় বোন রয়েছে। তারা ওয়েলশ প্রেসবাইটেরিয়ান ধর্মাবলম্বী হিসেবে বেড়ে ওঠেন।[৩] জনাথন হলিওয়েল গ্রামার স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং ১৬ বছর বয়সে আর্ট কলেজে ভর্তি হন। এরপর তিনি ল্যাঙ্কাশায়ারের ওর্মসকার্কে এজ হিল কলেজে (বর্তমান এজ হিল বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষক হওয়ার প্রশিক্ষণ শুরু করেন। পড়াশোনাকালীন তিনি কলেজের মঞ্চনাটকে অংশগ্রহণ করতেন। তার অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে একজন শিক্ষক তাকে অভিনেতা হওয়ার পরামর্শ দেন এবং জনাথনের পক্ষ থেকে রয়্যাল অ্যাকাডেমি অভ ড্রামাটিক আর্টে ভর্তির আবেদন করেন। প্রাইস রয়্যাল অ্যাকাডেমির বৃত্তি পান। তিনি যখন ইকুইটিতে যোগ দেন, তিনি তার মঞ্চনাম পরিবর্তন করে "জনাথন প্রাইস" রাখেন, কারণ তার জন্মনাম ইকুইটিতে ভর্তি হওয়া অন্য একজন অভিনেতার সাথে মিলে গিয়েছিল।[৪][৫][৬] রয়্যাল অ্যাকাডেমিতে অধ্যয়নকালে তিনি ভেলভেট পেইন্টিঙের বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন।[৭]