ঘেরন্দসংহিতা (সংস্কৃত: घेरंडसंहिता, আইএএসটি: Gheraṇḍasaṁhitā) হল
যোগ সম্পর্কিত একটি সংস্কৃত পাঠ্য। পাঠ্যটি হঠযোগের তিনটি টিকে থাকা শাস্ত্রীয় গ্রন্থগুলির মধ্যে একটি, যোগের সবচেয়ে বিশ্বকোষীয় গ্রন্থগুলির একটি, এবং অন্য দুটি হল হঠযোগ প্রদীপিকা ও শিবসংহিতা।[১][২][৩]
পাঠ্যটির চৌদ্দটি পাণ্ডুলিপি জানা যায়, যেগুলি বাংলা থেকে রাজস্থান পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে আবিষ্কৃত হয়েছিল। প্রথম সমালোচনামূলক সংস্করণটি ১৯৩৪ সালে আদিয়ার লাইব্রেরি দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল, এবং দ্বিতীয় সমালোচনামূলক সংস্করণটি ১৯৭৪ সালে দিগম্বরজি ও ঘোট দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল।[৪] কিছু সংস্কৃত পান্ডুলিপিতে অব্যকরণগত ও অসংলগ্ন শ্লোক রয়েছে এবং কিছু পুরানো সংস্কৃত গ্রন্থের উল্লেখ রয়েছে।[৪]
এটি সম্ভবত ১৭ শতকের শেষের পাঠ্য, সম্ভবত উত্তর-পূর্ব ভারতে রচিত, এবং এটি ঘেরন্দ ও চন্দর মধ্যে কথোপকথনের উপর ভিত্তি করে শিক্ষণ সংক্ষিপ্ত গ্রন্থ হিসাবে গঠিত।[৫][৬][৭] পাঠ্যটিতে সাতটি অধ্যায় এবং ৩৫১টি শ্লোক রয়েছে।[৬]
বিষয়বস্তু
মায়ার মত কোন প্রতিবন্ধক নেই, শৃঙ্খলা (যোগ) থেকে আসা শক্তির মত শক্তি নেই, জ্ঞানের চেয়ে বড় কোন বন্ধু নেই, এবং অহংকারের চেয়ে বড় শত্রু নেই।
ঘেরন্দসংহিতা নিজেকে ঘটস্থ যোগের উপর একটি পাঠ্য, যার আক্ষরিক অর্থ "পাত্র যোগ", যেখানে শরীর ও মনকে এমন পাত্র হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছে যা আত্মা বহন করে এবং সেবা করে।[১][৬] এটিকে সাধারণত হঠযোগ পাঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[১][৯][১০] পাঠ্যটি পতঞ্জলির যোগসূত্রে আট অঙ্গযুক্ত যোগের বিপরীতে, গোরক্ষসংহিতার ছয় অঙ্গযুক্ত যোগ এবং হঠযোগ প্রদীপিকাতে চার অঙ্গযুক্ত যোগের শিক্ষা দেয়।[১] এটি সাত ধাপ আজীবন ক্রমাগত আত্ম-বিকাশের মাধ্যমে ব্যক্তির শরীর, মন ও আত্মার পরিপূর্ণতা হওয়ার লক্ষ্য ঘোষণা করে। এই লক্ষ্যের মাধ্যমগুলির মধ্যে রয়েছে আত্মশুদ্ধিকরণ, শরীরের শক্তি বৃদ্ধির জন্য বত্রিশটি আসনের বিবরণ, শরীরের নিখুঁত স্থিরতার জন্য পঁচিশটি মুদ্রা, প্রত্যাহারের পাঁচটি উপায়, সঠিক পুষ্টি ও জীবনযাত্রার পাঠ, দশ ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, ধ্যানের তিনটি পর্যায় এবং ছয় প্রকার সমাধি।[১১]
পাঠ্যটি শ্রদ্ধার সাথে হিন্দু দেবতা শিব ও বিষ্ণুকে আহ্বান করে, ৫.৭৭ ও ৭.৪ এর মতো শ্লোকগুলির সাথে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে লেখকও অদ্বৈত বেদান্ত ধারণা দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলেন যেমন "আমিই ব্রহ্ম [পরমাত্মা] এবং অন্য কিছু নয়; আমার রূপ সত্য , চেতনা ও আনন্দ (সচ্চিদানন্দ); আমি চিরকাল মুক্ত"।[১২]
↑Guy L. Beck (১৯৯৩)। Sonic Theology: Hinduism and Sacred Sound। University of South Carolina Press। পৃষ্ঠা 102–103। আইএসবিএন978-0-87249-855-6।, Quote: "The Gheranda Samhita, Siva Samhita and Hatha Yoga Pradipika are three of the most important Hatha Yoga texts and are intimately connected with the practice of Nada Yoga as propounded by Gorakhshanath and his school."