কৈলাশটিলাসিলেটের ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান। শাহজালাল ইয়েমেনীর ৩৬০ আওলিয়ার সফর সঙ্গী শাহ নূর এখানে আস্তানা গড়ে ছিলেন। ইবাদতের জন্য কৈলাশটিলার উপরে একটি গুহা নির্মাণ করেন যা আজও বিদ্যমান।[১] প্রায় ৪০০ ফুট উঁচু টিলার উপরে ঈদগাহ অবস্থিত যেখানে স্থানীয় লোকজন ঈদের নামাজ পড়েন। কৈলাশটিলা বাংলাদেশের একমাত্র খনিজ তেলক্ষেত্র হওয়ায় দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্ব ভুমিকা রাখছে। কৈলাশটিলা একইসাথে খনিজতেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র।[২]
ভূতাত্ত্বিক গঠন
সিলেট শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে গোলাপগঞ্জ উপজেলারলক্ষণাবন্দ ইউনিয়নে অবস্থিত। এই ভূতাত্ত্বিক গঠনটি বঙ্গীয় পুরঃখাতের বলিত বলয়ের পার্শ্বে অর্থাৎ সিলেট খাদের পূর্ব পার্শ্বে অবস্থান করে। এটি উত্তরে সিলেট ভূতাত্ত্বিক গঠন, পূর্বে বিয়ানীবাজার এবং দক্ষিণে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত। এই ভূতাত্ত্বিক গঠনটিকে গিরিশিরার মাঝখানের সামান্য চাপা অংশ ফেঞ্চুগঞ্জ ঊর্ধ্বভাঁজটি থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। এই ঊর্ধ্বভাঁজটি ডুপিটিলা স্তরসমষ্টি সমেত ভূ-পৃষ্ঠে প্রকটিত। [৩]
এটি একটি উত্তর-উত্তরপূর্ব ও দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিম দিকে বিন্যস্ত অসম ঊর্ধ্বভাঁজ। একটি ঘাত চ্যুতি উত্তর দিকে সিলেট ভূতাত্ত্বিক গঠন থেকে কৈলাস টিলা ভূতাত্ত্বিক গঠনকে পৃথক করেছে। ভূতাত্ত্বিক গঠনটি ৬ কিমি লম্বা এবং ৩ কিলোমিটার চওড়া। পূর্ব পার্শ্ব অপেক্ষা পশ্চিম পার্শ্ব খাড়া।[১]
ইতিহাস
পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানি ১৯৬২ সালে এটি আবিষ্কার করে। এটি বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্র। এখানে প্রমাণিত ও সম্ভাব্য গ্যাস মজুত ৩.৬৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট এবং উত্তোলনযোগ্য মজুত ২.৫২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাসের সঙ্গে এখানে প্রচুর পরিমাণে কনডেনসেটও পাওয়া যায়। ১৯৮৩ সাল থেকে অদ্যাবধি এই ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। অবাণিজ্যিকভাবে এই ক্ষেত্রের গভীরে খনিজ তেলও পাওয়া যায়।[৩]
অবস্থান
দেশের ঐতিহ্যবাহী একটি টিলা সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার কৈলাশ টিলা | যার খ্যাতি ছড়িয়ে আছে দেশ বিদেশে। এ কৈলাশ টিলা থেকে উত্তোলিত গ্যাস দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু এ কৈলাশ টিলায় যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা মুকিতলা গ্রামের ‘কৈলাশ টিলা সড়ক’।[২]