কুসুম বা জায়না (বৈজ্ঞানিক নাম: Schleichera oleosa) হচ্ছে Sapindaceae পরিবারের Schleichera গণের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি। এই গণে কেবল একটি প্রজাতিই আছে। এই প্রজাতিটি ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়াতে পাওয়া যায়। কুসুম কুল বা কুসুম ফল লালমাটির লুপ্তপ্রায় অরণ্য সম্পদ। ২০ বছর আগেও গ্রামে গঞ্জে বনেবাদাড়ে গরম কালে প্রচুর পাওয়া যেত। টক মিষ্টির অনুপাতটা মেদিনীপুর বাসীর জিভের চাহিদার সমানুপাতিক। ফলটির খোলসটা সবুজাভ খয়েরি রঙের। খোলস ছাড়ালেই ডিমের কুসুম রঙা শাঁস। বীজটি কুসুম তেল তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। কুসুমের বিজ্ঞান সম্মত নাম স্কেচেইরা ওলেসিয়া। ইংরেজিতে সাইলন ওক। আমাদের দেশে কুসুম ফলের কোনও অাভিজ্যাত না থাকলেও পশ্চিমী দেশে ফলটি স্পানিশ লেমন নামে সমাদৃত। হিন্দিতে এর নাম - কুসুম - কসুম, মালয়ালম নাম - পুশম, কত্তিলাই, মারাঠি নাম - কুসুম - কসুম্ব, তেলুগু নাম - আদাদি মামিদি, পোস্কু, বুসু, পুস্কু, কোসাঙ্গি, তামিল নাম - পুমরত, কাম্বাডিরি, কন্নড় নাম- জেন্ডাল চকোথ, চকোটা (চকোটা নিয়ে বিভ্রান্ত হবেনা, যা একটি ভিন্ন সাইট্রাস ফল)। গুজরাটি নাম - কোসুম কোসুম।
ঔষধি গুণাগুণ
পরিপক্ব কুসুম ফলের বহুমুখী উপকারিতা। এটি ক্ষিদে বাড়ায়, কফ নাশ করে, হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। শুধু কুসুম ফল নয়, পুরো কুসুম গাছটির প্রতিটি অংশই কোনও না কোনও ঔষধি গুণসম্পন্ন। কুসুম গাছের ছাল থেকে বাতের ওষুধ গ্রামে গঞ্জে কবিরাজরা এখনও তৈরি করেন। কুসুম বীজকে প্রথমে গরম জলে ফুটিয়ে, তারপর শুকনো করে নিষ্পেসিত তেল বহু কাজে লাগে। কুসুম গাছ বেশ লম্বা এবং ঝাঁকড়া। বসন্তে এর পাত তাম্রাভ লালচেতে রেঙে ওঠে প্রকৃতির শোভাবর্ধন করে।