কাতার সশস্ত্র বাহিনীকাতার এর সামরিক বাহিনী। ২০১৫ সাল থেকে, কাতার বছরে গড়ে ২,০০০ স্নাতক বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাস্তবায়ন করছে।[৩]
সিআইপিআরআই এর ২০১০ সালের হিসাব অনুসারে, কাতারের প্রতিরক্ষা ব্যয় মোট ১.৯১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা কাতার জিডিপি-এর প্রায় ১.৫%।[২]
কাতার ২০০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে,[৪] ২০১৩ সালে[৫]যুক্তরাজ্য এবং ১৯৯৪ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিল যৌথ প্রতিরক্ষা প্রচেষ্টায় কাতার সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। সংগঠনে আরো ৫টি সহযোগী দেশ আছে, এদের মধ্যে অন্যতম ইউ.এ.ই, এবং ওমান। এছাড়াও কাতারে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ২০১৭ সালে ওয়াশিংটনের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি সামরিক অ্যাটাচ অফিস উদ্বোধন হয়।[৬]
এসআইপিআরআই-এর তথ্য অনুযায়ী কাতার তাদের সামরিক পরিকল্পনাগুলো দ্রুত রূপান্তরিত করা এবং তার সশস্ত্র বাহিনীর শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার জন্য ২০১৪ সাল থেকে দ্রুতগতিতে কাজ করে যাচ্ছে এবং ২০১০-১৪ সালে কাতার বিশ্বব্যাপী ৪৬তম বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক দেশ ছিল।
কাতার ২০১৩ সালে জার্মানি থেকে ৬২টি ট্যাঙ্ক এবং ২৪টি স্ব-চালিত বন্দুক, ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৪টি হেলিকপ্টার ও ৩টি এ.ই.ডব্লিউ বিমান এবং স্পেন থেকে ২টি ট্যাঙ্কার বিমান আমদানি করেছিল।[৭] ২০১৬ সালে প্যাট্রিয়ট প্যাক-৩ এমএসই ব্যাটারির সংযোজনের মাধ্যমে কাতার সশস্ত্র বাহিনী শত্রুর হাত থেকে বিমান ও জাহাজ রক্ষায় আরো একধাপ এগিয়েছে,[৮] এক্সসিট এমএম ৪০, ব্লক ৩ এবং মার্টার অ্যান্টি-জাহাজ মিসাইল সশস্ত্র বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করেছে।[৯]
ইতিহাস
১৯৭১ সালে দেশটি যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৯১ সালে কাতার সশস্ত্রবাহিনী খাফজী যুদ্ধ ও উপসাগরীয় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।[১০]
জুলাই ২০০৮ সালে, মার্কিন প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থা কাতারের যৌক্তিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম ও পরিষেবাদির অনুরোধে সাড়া দেয় এবং সহায়তা ব্যবস্থা মোট মূল্য $৪০০ মিলিয়ন ডলার হিসাবে নির্ধারণ করা হয়।
আলজাজিরা সংবাদ অনুযায়ী, ডিসেম্বর ২০১৬ সালে কাতার সশস্ত্র বাহিনী ইয়েমেনের বহিষ্কৃত রাষ্ট্রপতি আব্দুরব্বু মনসুর হাদি এর সশস্ত্র বাহিনীর সৈন্যদের বিপক্ষে যুদ্ধে ১০০০ স্থল সৈন্য নিয়োজিত করেছিল এবং ২০০ টি আর্মার্ড হেলিকপ্টার এবং ৩০টি আপাচি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ইয়েমেনের মরিব প্রদেশে হামলা চালিয়েছিল কাতার সশস্ত্র বাহিনী।[১১]
ইয়েমেনে অবস্থানকালে কাতার সশস্ত্র বাহিনীর ৪ জন নিহত এবং ২ জন আহত হয়েছিলেন।[১২]
ব্রিটিশদের সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি বাতিলের পর, ফ্রান্সের সঙ্গে কাতারের সম্পর্ক গড়ে উঠায় ১৯৮০ এর দশকে সকল অস্ত্র ফ্রান্স থেকেই আমদানি করতো।
ট্যাঙ্ক ব্যাটালিয়ন ফরাসি-নির্মিত এ.এম.এক্স-৩০ প্রধান যুদ্ধ ট্যাংক নিয়ে সজ্জিত ছিল, পরে জার্মানির লিওপার্ড ২এ৭ প্রতিস্থাপন করা হয়।[১৩] অন্যান্য যুদ্ধযানগুলোর মধ্যে ফরাসি এ.এম.এক্স-১০পি এপিসি এবং ফ্রেঞ্চ ভ্যাব রয়েছে, যা স্ট্যান্ডার্ড হুইলড যুদ্ধের যানবাহন হিসাবে গৃহীত হয়েছে।
আর্টিলারি ইউনিটিতে কয়েকটি ফ্রেঞ্চ ১৫৫ মিমি স্ব-চালিত হিটজাইটার রয়েছে। প্রধান অ্যান্টিট্যাঙ্ক অস্ত্র ফরাসি মিলান ক্ষেপণাস্ত্র। এছাড়াও কাতার অবৈধভাবে আফগান বিদ্রোহী গোষ্ঠী থেকে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র উদ্ধার করে সংরক্ষণ করেছিল। একটি সময়ে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্য প্রাচ্যের উপর শক্ত নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টায় ছিল তখন কাতার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রত্যাখ্যান করতে অস্বীকার করেছিল। ফলে মার্কিন সেনেট ১৯৮৮ সালে কাতারকে সব অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল। পরবর্তীতে ১৯৯০-এর দশকে কাতার দায় স্বীকার করলে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধে কাতারি ট্যাংক ব্যাটালিয়ন যুদ্ধ করেছিল, তাদের এ্যামএক্স -৩০ যুদ্ধযানগুলো খাফজি যুদ্ধতেও অংশগ্রহণ করেছিল। বেশিরভাগ পাকিস্তানীদের নিয়ে কাতারি সেনাবাহিনী গঠিত, যুদ্ধের সময় তারা নিজেদের সুষ্ঠুভাবে মেলে ধরেছিল।[১৪]
কাতার ২৪টি স্ব-চালিত বন্দুক পিএইচজেড ২০০০ এবং ৬২ টি লিওপার্ড ২টি প্রধান যুদ্ধ ট্যাংক সরবরাহের জন্য জার্মান প্রতিরক্ষা সংস্থা ক্রস-মাফফি ওয়েগম্যান (কেএমডব্লিউ) এর সাথে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।[১৫]