এলাপিডি (ইংরেজি: Elapidae), বা এলাপিড হচ্ছে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে প্রাপ্ত বিষধর সাপসমূহের একটি পরিবার। এর মূল বিস্তৃতি ভারত মহাসাগরীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। এলাপিড (Elapid) শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ éllops থেকে, যার বাংলা অর্থ সমুদ্রের মাছ; ইংরেজি: sea-fish।[১] এদের আকৃতির একটি বিস্তৃত সীমা আছে, এবং সেটা মাত্র ১৮ সেন্টিমিটার দৈর্ঘের ড্রাইসডালিয়া (Drysdalia) থেকে ৬ মিটার লম্বা শঙ্খচূড়ও হতে পারে। এখন পর্যন্ত এই পরিবারভুক্ত ৬১টি গণ এবং ৩২৫টি প্রজাতি কথা জানা যায়[২]
ভূ-তাত্ত্বিক বিস্তৃতি
ভূ-পৃষ্ঠে ইউরোপ ব্যতীত সমগ্র গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল জুড়েই এলাপিডি পরিবারভুক্ত সাপের বিস্তৃতি লক্ষ্য করা যায়। আর এই পরিবারভুক্ত সামুদ্রিক সাপসমূহ মূলত দেখা যায় ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। ব্যতিক্রমীভাবে এই পরিবারভুক্ত পেলামিস প্লাটুরাস (Pelamis platura) সাপের উপস্থিতি প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকাতেও দেখা যায়।[৩]
বিষ
সকল এলাপিড-ই বিষাক্ত এবং কিছু কিছু এলাপিডের বিষ মারণঘাতী। বিষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিউরোটক্সিক, এবং এটিকে ভাইপারের প্রোটিওলাইটিক বিষ থেকেও মারাত্মক ধরা হয়। এই পরিবারভুক্ত এবং সেই সাথে পৃথিবীর দীর্ঘতম সাপ শঙ্খচূড় বা রাজ গোখরা (Ophiophagus hannah) যথেস্ট দূরত্ব বজায় রেখে দংশন করতে পারে, এবং একটি দংশনে যথেষ্ট পরিমাণ বিষ আক্রান্তের শরীরে প্রবেশ করিয়ে দিতে সক্ষম। আরকটি প্রজাতি, ব্ল্যাক মাম্বাও (Dendroaspis polylepis) নিজেকে হুমকির সম্মুখীন মনে করলে মরণঘাতী দংশন করার ক্ষমতা রাখে। সেই সাথে ব্ল্যাক মাম্বা আফ্রিকার দীর্ঘতম, পৃথিবীর দ্বিতীয় দীর্ঘতম, এবং পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগামী এবং আক্রমণাত্বক সাপ হিসেবে স্বীকৃত। অনেক বিশেষজ্ঞই এলাপিডি পরিবারভুক্ত এই সাপ দুটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক সাপ বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়াও এলাপিড পরিবারভুক্ত আরো দুটি সাপ সারা বিশ্বেই যথেষ্ট বিখ্যাত। এর একটি হচ্ছে ইনল্যান্ড টাইপ্যান (Oxyuranus microlepidotus); যা ভূমিতে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর সাপ। এবং আরো আছে সামুদ্রিক সাপ হাইড্রোফিস বেলচেরি (Hydrophis belcheri), যা জল-স্থল নির্বিশেষে পৃথিবীতে প্রাপ্ত সবচেয়ে বিষধর সাপ হিসেবে প্রমাণিত।
তথ্যসূত্র
উইকিমিডিয়া কমন্সে
এলাপিডি সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।