ইসলামী উদ্যান সাধারণত ভূমির একটি অংশ যেখানে পানি ও ছায়ার প্রসঙ্গটি প্রধান্য পায়। এসব উদ্যানের সবচেয়ে পরিচিত স্থাপত্য নকশা হলো 'চারবাগ' (বা চাহার বাগ) নকশা, যেখানে চারটি ছোট বাগান হাঁটার পথ বা প্রবহমান পানি দ্বারা বিভক্ত থাকে। হাঁটার জন্য তৈরি ইংরেজি উদ্যানের থেকে ভিন্ন হয়ে, ইসলামিক উদ্যানগুলো বিশ্রাম, প্রতিফলন এবং চিন্তার জন্য ডিজাইন করা হয়। ইসলামী বাগানের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অভিজ্ঞতা প্রদান করা, যা পানি এবং সুগন্ধি উদ্ভিদের ব্যবহারের মাধ্যমে অর্জন করা হতো।
ইসলাম বহু অঞ্চলের জলবায়ুতে ছড়িয়ে পড়ার আগে, ঐতিহাসিকভাবে এই উদ্যানগুলি গরম ও শুষ্ক পরিবেশ থেকে অবকাশ প্রদানের জন্য ব্যবহৃত হত। এগুলি বিভিন্ন উদ্দেশ্যের জন্য নানা আকার ধারণ করতো, যার বেশিরভাগই আর অস্তিত্ব নেই। কুরআনে উদ্যানের অনেক উল্লেখ রয়েছে এবং বলা হয়েছে যে উদ্যানগুলি মুমিনদের জন্য প্রতিশ্রুত জান্নাতের পার্থিব উপমা হিসাবে কাজ করে:
“আল্লাহ বিশ্বাসী পুরুষ ও বিশ্বাসী নারীদের জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হবে, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে এবং চিরস্থায়ী আবাসস্থলে উত্তম বাসস্থান তৈরি করবে; আর আল্লাহর সন্তুষ্টিই সবচেয়ে উত্তম; সেটাই মহান সাফল্য।” – কুরআন ৯:৭২
উদ্যানের জনপ্রিয় জান্নাতী ব্যাখ্যার পাশাপাশি, ইসলামী উদ্যানগুলির সাথে সম্পদ, ক্ষমতা, অঞ্চল, আনন্দ, শিকার, অবসর, ভালোবাসা, সময় ও স্থান সহ আরও বেশ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট সংযোগ রয়েছে। এই অন্যান্য সংযোগগুলি শান্ত চিন্তা ও প্রতিফলনের বিষয়ে আরও বেশি প্রতীকী তাৎপর্য অর্জন করে এবং একটি পণ্ডিতপূর্ণ ধারণার সাথে যুক্ত হয়।
অনেক ইসলামী উদ্যান আর না থাকলেও, পণ্ডিতরা এই বিষয়ে আরবি ও ফারসি সাহিত্যের উপর ভিত্তি করে সেগুলো সম্পর্কে অনেক কিছুই অনুমান করেছেন। পশ্চিমে স্পেন ও মরক্কো থেকে পূর্বে ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে অসংখ্য আনুষ্ঠানিক ইসলামী উদ্যান টিকে আছে। তবে, কোন উদ্যানগুলিকে ইসলামী উদ্যানের ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে বিবেচনা করা উচিত তা নিয়ে ঐতিহাসিকরা একমত নন।[১] এই ঐতিহ্য বেশ কয়েক শতাব্দী ধরে তিনটি মহাদেশকে প্রভাবিত করেছে।