আব্দুল মালেক (১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪-১৯ জানুয়ারি ২০১৬) ছিলেন বাংলদেশের একজন রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি তৎকালীন ময়মনসিংহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।[১][২][৩]
প্রাথমিক জীবন
আব্দুল মালেক ১৯৩১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ময়মনসিংহের জামালপুরের সরিষাবাড়ীর কামরাবাদ ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নজাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষাজীবন শুরু করে ১৯৫২ সালে সরিষাবাড়ী আরডিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাস করেন।[৪]
তার স্ত্রী তার স্ত্রী মালেকা বেগম, এই দম্পতীর ৬ ছেলে ও ৪ মেয়ে। ছেলেরা যথাক্রমে বড় ছেলে আব্দুর রাজ্জাক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। দ্বিতীয় ছেলে চিকিৎসক মাহফুজুর রহমান, এমআরসিপি; আয়ারল্যান্ডে কর্মরত। তৃতীয় ছেলে মাহবুবুর রহমান হেলাল, ব্যবসায়ী, সাবেক চিফ মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, এবং মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। চতুর্থ ছেলে মাকসুদুল আলম, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে কর্মরত। পঞ্চম ছেলে মহিতুল ইসলাম, স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং ছোট ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সহ সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সরিষাবাড়ী পৌরসভা। মেয়েরা যথাক্রমে বড় মেয়ে চিকিৎসক রোকসানা আজিম, মেজো মেয়ে চিকিৎসক মাহমুদা নাসরিন গাইনোকোলোজিস্ট। ছোট মেয়ে চিকিৎসক মমতাজ পারভীন আয়ারল্যান্ড প্রবাসী।[৪]
কর্মজীবন
আব্দুল মালেক পাট ব্যবসা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন।[৪]
রাজনৈতিক জীবন
আব্দুল মালেক ময়মনসিংহ জেলার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
১৯৬৪ সালে তিনি কামরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং পরে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদের তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন এবং প্রায় ৪০ বছর সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
তিনি ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন ময়মনসিংহ-৪ আসন (বর্তমান জামালপুর-৪) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।[২][৩][৫] প্রথম জাতীয় সংসদে তিনি পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত হন। পরে জুট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৪]
১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জামালপুর-৪ আসন থেকে তৃতীয় বারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে পরাজিত হন।[৪]
মুক্তিযুদ্ধে অবদান
আব্দুল মালেক ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঢালু, তুরাগ পাহাড়, মানকের চর ও মহেন্দ্রগঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত শরনার্থী শিবিরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১২ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে ঐতিহাসিক গণময়দানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সরিষাবাড়ী থানা হানাদার বাহিনী মুক্ত ঘোষণা করেন।[৪]
মৃত্যু
আব্দুল মালেক ১৯ জানুয়ারি ২০১৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[২][৩]
তথ্যসূত্র