আবদুর রউফ চৌধুরী (জন্ম: ৮ আগস্ট ১৯৩৫- মৃত্যু: ২৪ জুলাই ২০১৪) একজন মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিবিদ এবং কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে এবং ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।[১][২]
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
আবদুর রউফ চৌধুরী ৮ আগস্ট ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলাধীন ছত্রগাছা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম আব্দুল জব্বার চৌধুরী। তিনি ১৯৫০ সালে কুষ্টিয়ার মুসলিম হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯৬২ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে সেই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হয়ে কোর্স সমাপ্ত করেন। কিন্তু পরীক্ষার সময় সেফটি এক্টে কারাবরন করার কারণে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হয়নি।
রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
আবদুর রউফ চৌধুরী মুসলিম ছাত্রলীগের সেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্য ও কুষ্টিয়া জেলা শাখা ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ - ৫৮ সালে কুষ্টিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের ভি,পি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশবিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হন এবং শিক্ষা কমিশন রিপোর্টের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন।
১৯৬৩ সালে তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির "গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচী প্রনয়ন " সাবকমটির আহবায়ক নির্বাচিত হন এবং কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে তার পেশকৃত "গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচি " গৃহীত হয়। আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনে কুষ্টিয়া জেলায় উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করেন। একই বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চ্যান্সেলর গভর্নর মোনায়েম খানের উপস্থিতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন এবং গ্রেফতার হন। ১৯৬৬ সালে তিনি কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঊনসত্তরের গনঅভ্যুত্থানে তিনি সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ( এমপিএ) নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে কুষ্টিয়ায় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন এমসিএ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জোনাল কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশের সংবিধান রচনা কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। সে সময় কুষ্টিয়ার ত্রান ও পুনর্বাসন কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়। তিনি কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৭৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৬ সালে ডেমোক্রেটিক লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও জাতীয় কমিটির সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে ডেমোক্রেটিক লীগ বিলুপ্ত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দিয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সালের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৩]
পারিবারিক জীবন
আবদুর রউফ চৌধুরীর স্ত্রী নার্গিস চৌধুরী একজন আইনজীবী ও সমাজ সেবিক। বড় ছেলে ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী, ছোট পুত্র সারেক রউফ চৌধুরী। কন্যা আলমা চৌধুরী।
মৃত্যু
আবদুর রউফ চৌধুরী ২৪ জুলাই ২০১৪ সালে বাংলাদেশের ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।[৪][৫]
তথ্যসূত্র