অসলো চুক্তি হচ্ছে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার মধ্যে হওয়া একাধিক চুক্তির সম্মিলিত রূপ। এর আওতায় ১৯৯৩ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে অসলো চুক্তি ১ সই হয়,[১] এবং তার ধারাবাহিকতায় মিশরের তাবায় ১৯৯৫ সালে অসলো চুক্তি ২ স্বাক্ষরিত হয়।[২] চুক্তিতে স্থির হয়, পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যকা থেকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী পর্যায়ক্রমে সরে যাবে। পাঁচ বছরের জন্য "অন্তর্বর্তী স্বশাসিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ" গঠিত হবে। এরপর জাতিসংঘের ২৪২ ও ৩৩৮ প্রস্তাবের ভিত্তিতে স্থায়ী সমাধান হবে। এর মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে লিখিত না হলেও এ ইঙ্গিত থাকে যে একদিন ইসরায়েলের পাশে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠিত হবে। এই চুক্তি শান্তি চুক্তি হিসেবে ইতিহাসে প্রখ্যাত। অসলো চুক্তি বাস্তবায়নের পূর্বোক্ত প্রক্রিয়াগুলো (বিভিন্ন মিটিংগুলো) অসলোতে হয়েছিল খুব গোপনে। যার ফলে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি হিসেবে পিএলও ইসরায়েল রাষ্ট্র মেনে নেয়। ইসরায়েলিরা মেনে নেয় যে, ফিলিস্তিনি লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে।
অসলো চুক্তি অনুসারে প্যালেস্টাইন অথোরিটি নামে একটি অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠিত হয়; যারা পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকায় স্বায়ত্তশাসন কায়েম করতে পারবেন। এই চুক্তির কারণে পিএলও ইসরাইলের স্বীকৃত স্থায়ী মিত্র হিসেবে বিবেচিত হবে; যার ফলে বিবদমান প্রশ্নগুলো গুলো নিয়ে আলোচনা করার দ্বার উন্মুক্ত হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো ছিল ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারণ, ইসরাইলিদের আবাসন প্রক্রিয়া, জেরুসালেমের মর্যাদা, ইসরাইলি সৈন্যদের উপস্থিতি এবং ফিলিস্তিনের স্বায়ত্তশাসন স্বীকার করে নেওয়ার পর মিলিটারীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কী করা হবে ও ফিলিস্তিনিদের ফিরে আসার অধিকারের ব্যাপারে আলোচনা করা। যাইহোক, অসলো চুক্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন নিয়ে কিছু বলা হয় নি।[৩]
অসলো প্রক্রিয়া
অত্যন্ত গোপনে ইসরাইল এবং পিএলওর মধ্যে অসলো শান্তিচুক্তি প্রক্রিয়ার কার্যক্রম ১৯৯৩ সালে শুরু হয়। দফায় দফায় আলোচনা, চুক্তি সইয়ে বিলম্ব, মধ্যস্থতা, পুনরায় আলাপ আলোচনার পর শেষমেশ এ চুক্তি সই হয়। এ চুক্তির আওতাধীনে একাধিক চুক্তি সই হয়, যদিও এ চুক্তির কার্যক্রম ২০০০ সালের ক্যাম্প ডেভিড সম্মেলনের ব্যর্থতা ও দ্বিতীয় ইন্তিফাদার (গণঅভ্যুত্থান) পরে ভেঙে যায়।[৪][৫]
দ্বিতীয় ইন্তিফাদা চলাকালীন শান্তির রোডম্যাপ প্রস্তুত করে যেখানে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাজ্য প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দুইটা রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়। কিন্তু এই রোডম্যাপও অসলো প্রক্রিয়ার মত কার্যকর হয় নি।
প্রেক্ষাপট
অসলো চুক্তি ১৯৭৮ সালের ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির উপর ভিত্তি করে নির্মিত এবং উভয় চুক্তিতেই সাদৃশ্য আছে।[ক]
ক্যাম্প ডেভিডের "ফ্রেমওয়ার্ক ফর পিস ইন দ্য মিডল ইস্ট" ছিল পশ্চিম তীর এবং গাজার শুধুমাত্র স্থানীয় বাসিন্দারা (ফিলিস্তিনি) যাতে ভবিষ্যতে স্বায়ত্তশাসন করতে পারে তার একটা কল্পনা (এনভিশন)। সেসময় পূর্ব জেরুসালেমের বাইরে, পশ্চিম তীর অঞ্চলে ৭,৪০০ এবং[৬] গাজায় ৫০০ ইহুদি বসতি স্থাপনকারী ছিল।[৭] ইসরায়েল তখন পিএলওকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করায় ফিলিস্তিনি মানুষদের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী দলের সাথে কথা বলাকে প্রত্যাখান করে। তবে ইসরাইল মিশর এবং জর্ডানের সাথে সমঝোতায় এসে পশ্চিম তীর এবং গাজার বাসিন্দাদের মধ্য থেকে প্রতিনিধি নির্বাচিত করে।[ক]
ক্যাম্প ডেভিডের প্রধান লক্ষ্য ছিল ইসরাইল এবং মিশরের মধ্যে শান্তি চুক্তি স্থাপন করা হয়েছিল। যেখানে অসলো চুক্তি সরাসরি ইসরাইল এবং পিএলওর মধ্যে সংগঠিত হয়েছিল। এর শর্ত ছিল, পশ্চিম তীর ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীকে পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে এবং ‘ফিলিস্তিনি অন্তর্বর্তীকালীন স্বশাসন কর্তৃপক্ষ’ পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব নেবে। পর্যায়ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র।[ক] যাইহোক ১৯৯৪ সালের ২৪ অক্টোবর যখন ইসরাইল-জর্ডান শান্তি চুক্তি চূড়ান্ত হয়, ফিলিস্তিনিদের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধিই সেসময় সেখানে উপস্থিত ছিল না।
সম্ভবত ইচ্ছাকৃতভাবেই উভয় পরিকল্পনাতেই কোনো বিকল্প পরিকল্পনা করা হয় নি। এর ফলে কোনো চূড়ান্ত চুক্তিতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয় নি।
অসলো চুক্তির বিকল্প
দুইটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের পরিবর্তে একক রাষ্ট্র গঠন করে সমাধানের কথা বিকল্প হিসেবে চুক্তিতে বলা হয়েছিল। এরফলে ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের সমস্ত অঞ্চলকে একত্র করে একটি রাজ্য বলা হবে এবং একজন সরকার থাকবে। এর ফলে কোনো পক্ষই সমস্ত ভূমিকে নিজের বলে দাবী করতে পারবে না।[৮] বিরোধিরা যুক্তি দিয়েছেন, এমনটা হলে সংখ্যালঘু ইহুদীদের জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।[৯]
আরো দেখুন
Oslo, 2016 drama by J.T. Rogers, premiere production July 2016 in London
Egypt and Israel agree that, ... there should be transitional arrangements for the West Bank and Gaza for a period not exceeding five years. In order to provide full autonomy to the inhabitants, under these arrangements the Israeli military government and its civilian administration will be withdrawn as soon as a self-governing authority has been freely elected by the inhabitants of these areas to replace the existing military government.
Egypt, Israel, and Jordan will agree on the modalities for establishing elected self-governing authority in the West Bank and Gaza. The delegations of Egypt and Jordan may include Palestinians from the West Bank and Gaza or other Palestinians as mutually agreed. The parties will negotiate an agreement which will define the powers and responsibilities of the self-governing authority to be exercised in the West Bank and Gaza. A withdrawal of Israeli armed forces will take place and there will be a redeployment of the remaining Israeli forces into specified security locations. The agreement will also include arrangements for assuring internal and external security and public order. A strong local police force will be established, which may include Jordanian citizens. In addition, Israeli and Jordanian forces will participate in joint patrols and in the manning of control posts to assure the security of the borders.
When the self-governing authority (administrative council) in the West Bank and Gaza is established and inaugurated, the transitional period of five years will begin. As soon as possible, but not later than the third year after the beginning of the transitional period, negotiations will take place to determine the final status of the West Bank and Gaza and its relationship with its neighbors and to conclude a peace treaty between Israel and Jordan by the end of the transitional period. These negotiations will be conducted among Egypt, Israel, Jordan and the elected representatives of the inhabitants of the West Bank and Gaza. (See JimmyCarterLibrary, The Framework for Peace in the Middle Eastওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে (1978). Accessed December 2013)